Coronavirus

কৃষি পরিকাঠামো-বিপণনে ১ লক্ষ কোটি, নির্মলার প্যাকেজে মৎস্যচাষ-পশুপালনও

প্যাকেজের বাইরেও এ দিন কৃষিক্ষেত্র তথা কৃষকদের সুবিধা দিতে তিনটি সংস্কারের ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারামন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২০ ১৮:৫৭
Share:

কৃষিক্ষেত্রের জন্য আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেন অর্তমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প। তার পর পরিযায়ী শ্রমিক। শুক্রবার ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের তৃতীয় কিস্তিতে কৃষিক্ষেত্রকে ঘিরে একাধিক পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কৃষির পরিকাঠামো, পরিবহণ, বিপণন ক্ষেত্রের উন্নয়নে ১ লক্ষ কোটির আর্থিক পুনরুজ্জীবন প্যাকেজের দেওয়ার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। প্রচলিত কৃষিকাজ ছাড়াও মৎস্যচাষ, পশুপালন, দুগ্ধ উৎপাদন ও বিপণন, মৌমাছি পালনের মতো ক্ষেত্রকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা হয়েছে কৃষিভিত্তিক তিনটি সংস্কারও।

Advertisement

তবে আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই সব আর্থিক প্যাকেজের কোনওটাই কার্যত প্রত্যক্ষ ভাবে কৃষকদের জন্য বা কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত নয়। বরং ঘুরপথে কৃষির সামগ্রিক উন্নয়নের মতো প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। এতে প্রকৃতপক্ষে কৃষকরা কতটা লাভবান হবেন, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে কৃষি বিশেষজ্ঞদের একাংশের।

কেন এমন বলছেন তাঁরা? যেমন সবচেয়ে বড় যে প্যাকেজের ঘোষণা হয়েছে ১ লক্ষ কোটির, সেই টাকা খরচ করা হবে কৃষি সহযোগী নানা ক্ষেত্রে। এর মধ্যে কোল্ড স্টোরেজ তৈরি, কৃষিপণ্য পরিবহণ ও বিপণনের মতো ক্ষেত্রে। অর্থমন্ত্রী যদিও বলেছেন, এর ফলে কৃষক ও কৃষি সমবায় সমিতিগুলি লাভবান হবে। তিনি জানিয়েছেন খুব শীঘ্রই তহবিল গঠন করে কাজ শুরু করা হবে।

Advertisement

প্রচলিত কৃষির পাশাপাশি এ দিন গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মৎস্যচাষ, পশুপালন, দুগ্ধ উৎপাদন, মৌমাছি পালনের মতো কৃষিক্ষেত্রকেও। মৎস্য চাষে প্যাকেজ ২০ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে ১১ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে সামুদ্রিক মৎস্য চাষ, শিকার ও রফতানি ক্ষেত্রে। বাকি ৯ হাজার কোটি দেওয়া হবে অন্তর্দেশীয় মৎস্য চাষের জন্য। গবাদি পশুর ক্ষুরা রোগ ও মুখের রোগ নিয়ন্ত্রণে টিকাকরণে খরচ করা হবে ১৩ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। ডেয়ারি শিল্পের জন্য প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার কোটির। যার মধ্যে দুগ্ধজাত সামগ্রী রফতানি ও উৎপাদন শিল্পে ইনসেনটিভের মতো ঘোষণা রয়েছে।

আরও পড়ুন: কেউ রাস্তায় হাঁটলে আদালত থামাবে কী করে? পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে মামলায় বলল শীর্ষ আদালত

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পক্ষেত্রে প্যাকেজের অঙ্ক ১০ হাজার কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে অঞ্চলভিত্তিক খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ ক্লাস্টার তৈরি করা হবে। উদাহরণ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, যেমন বিহারে মাখন খুব ভাল হয়। সেখানে মাখন ক্লাস্টার তৈরি হবে। তেমনি ভাবেই কাশ্মীরের কেশর, অন্ধ্রপ্রদেশের লঙ্কাকে ঘিরেও ক্লাস্টার গড়ে তোলা হবে। এই প্রকল্পে ২ লক্ষ অতিক্ষুদ্র খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ শিল্প উপকৃত হবে বলে দাবি নির্মলার। এ ছাড়া ভেষজ ও ওষধি উদ্ভিদ উৎপাদনে বরাদ্দ করা হয়েছে ৪ হাজার কোটি। যার মধ্যে গঙ্গার ধার বরাবর ৮০০ হেক্টর-সহ মোট ১০ লক্ষ হেক্টর জমিতে এই সব উদ্ভিদের চাষ করা হবে। এ ছাড়া মৌমাছি পালনেও প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। গ্রামীণ এলাকায় ২ লক্ষ মৌমাছি পালক চাষি এতে উপকৃত হবেন বলে দাবি অর্থমন্ত্রীর।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

আরও পড়ুন: ​ফের চার হাজারের লাফ, দেশে করোনা আক্রান্ত ৮২ হাজার ছুঁইছুঁই

এই প্যাকেজের বাইরেও এ দিন কৃষিক্ষেত্র তথা কৃষকদের সুবিধা দিতে তিনটি সংস্কারের ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারামন। প্রথমত, কৃষকদের ফসল বিক্রিতে স্বাধীনতা দিতে নতুন আইন আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এখন শুধুমাত্র লাইসেন্সধারী এজেন্টদেরই ফসল বিক্রি করতে পারেন চাষিরা। নতুন আইন এলে ফসল বিক্রিতে পুরোপুরি স্বাধীনতা পাবেন চাষিরা। তাঁদের ইচ্ছেমতো যে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছেই ফসল বিক্রি করতে পারবেন। আন্তরাজ্য ফসল বিক্রির সংস্থানও থাকবে নয়া আইনে। এ ছাড়া ‘অত্যবশ্যকীয় পণ্য আইন’ সংশোধন করে খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণের মতো ক্ষেত্রে কৃষিপণ্য মজুতের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়া হবে। তবে মহামারি বা দুর্যোগের সময় তাতে নিয়ন্ত্রণ আনতে পারবে সরকার। তৃতীয় সংস্কার তেমন স্পষ্ট নয়। শুধু বলা হয়েছে, কৃষকদের ফসলের দামের নিশ্চয়তা দিতে নতুন বিধি আনা হবে। কিন্তু সেই বিধি সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement