সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। —
প্রথম দিন লক্ষ্য ছিল ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং মধ্যবিত্ত। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে পরিযায়ী শ্রমিক, গরিব-নিম্নবিত্ত, কৃষক, ফুটপাতের ব্যবসায়ী ও হকারদের জন্য পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরাহা দিতে রেশন কার্ড না থাকলেও বিনামূল্যে দু’মাসের জন্য খাদ্যসামগ্রীর বন্দোবস্ত করবে সরকার, ঘোষণা নির্মলা সীতারামনের। এ ছাড়া ফুটপাতের দোকানদার-হকারদের জন্য ১০ হাজার টাকার ঋণের বন্দোবস্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী। রয়েছে কৃষকদের জন্যও প্যাকেজ।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে প্রথমেই নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, আজ মোট ৯টি পদক্ষেপের ঘোষণা করবেন। তার মধ্যে তিনটি প্যাকেজ বা পদক্ষেপ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য। বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য ইতিমধ্যেই গরিব কল্যাণ যোজনায় ছ’মাসের খাদ্যসামগ্রী বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই প্রকল্পে প্রতি মাসে মাথাপিছু পাঁচ কেজি চাল বা গম এবং এক কেজি ডাল দেওয়া হচ্ছে। এ দিন নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেছেন, ‘‘কার্ড না থাকলেও পরিযায়ী শ্রমিকরা আগামী দু’মাস বিনা পয়সায় খাদ্যসামগ্রী পাবেন।’’ অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘রেশন কার্ড ডিজিটাইজেশনের কাজ চলছে রাজ্য রাজ্যে। সেই কাজ আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই শেষ হবে। ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান রেশন কার্ড’ নামে এই প্রকল্পে দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে রেশন তুলতে পারবেন উপভোক্তারা।
ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে বেশি টাকায় ভাড়া থাকা শ্রমিকদের কাছে অন্যতম বড় সমস্যা। তার থেকে কিছুটা সুরাহা দিতে এ বার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো কোনও প্রকল্পে সরকার বাড়ি তৈরি করবে। সেই সব বাড়িতে কম ভাড়ায় থাকতে পারবেন শ্রমিকরা। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে এই সব বাড়ি তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এর পাশাপাশি রাজ্যের শ্রমিকরাও ওই সব বাড়িতে ভাড়া থাকার সুবিধা পাবেন।
আরও পড়ুন: এক বাজারেই সংক্রমণ ২৬০০ জনের! ভয়াবহ আতঙ্কের ছবি তামিলনাড়ুতে
হকার ও ফুটপাথের ব্যবসায়ীদের জন্য এ দিন ঋণদানের প্রকল্প ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারামন। এই প্রকল্পে ব্যবসায়ীরা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘সারা দেশে মোটামুটি ৫০ লক্ষ স্ট্রিট ভেন্ডর রয়েছেন। তাঁদের জন্য এই ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রকল্পের জন্য খরচ হবে ৫০০০ কোটি টাকা।’’ এ ছাড়া এই ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীরা ডিজিটাল পেমেন্ট চালু করলে ভবিষ্যতে আরও বেশি ঋণ, বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
আরও পড়ুন: ১০৫টি বিশেষ ট্রেন আসছে রাজ্যে, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, প্রকাশ হল তালিকাও
কৃষিক্ষেত্রে প্রতি বছর ৯০ হাজার কোটি টাকা দেয় নাবার্ড। কৃষি ঋণ সহ বিভিন্ন খাতে সেই টাকা সমবায় ও অন্যান্য গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে দেওয়া হয়। এ বার তার সঙ্গে কেন্দ্র আরও ৩০ হাজার কোটি টাকা দেবে নাবার্ড। এতে দেশের আড়াই কোটি কোটি কৃষক উপকৃত হবেন। এ ছাড়া মৎস্যচাষি ও পশুপালনকারীদেরও কিসান ক্রেডিট কার্ডের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্মলা সীতারামন।