উত্তরপ্রদেশের লখনউ স্টেশনে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকরা। ছবি: পিটিআই
পরিযায়ী শ্রমিক-সহ ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া আন্যান্যদের ঘরে ফেরাতে বিশেষ ট্রেন চালাবে রেল। কিন্তু বিনা পয়সায় নয়। টিকিটের জন্য গাঁটের কড়ি গুনেই উঠতে হবে সেই ট্রেনে। রেলমন্ত্রকের এই নির্দেশ ঘিরে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। এই নির্দেশের প্রতিবাদে মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।
ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়াদের ঘরে ফেরাতে ‘শ্রমিক স্পেশাল’ নামে ট্রেন চালানোর ঘোষণা করেছে রেলমন্ত্রক। তবে এমন পরিস্থিতিতেও বিনা পয়সায় ওই বিশেষ ট্রেনে চড়তে পারবেন না ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া মানুষ জন। রেল বলছে, এ জন্য রাজ্যকে টিকিটের দাম মেটাবেন যাত্রীরাই। রাজ্যের থেকে পুরো অর্থ বুঝে নেবে রেল। রেলমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত নিয়েই আপত্তি তুলেছে একাধিক রাজ্য। তাদের মতে, ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়াদের অনেকেই এখন নিঃসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এমন অবস্থায় তাঁরা কী ভাবে টিকিটের দাম মেটাবেন, সেই প্রশ্নও উঠছে। রেলকেই ওই খরচ বহন করতে হবে বলে দাবি তুলেছেন বিরোধীরা।
এ নিয়ে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব টুইট করেন, ‘‘বিজেপি সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে তাঁদের থেকে টাকা নেবে। এটা লজ্জাজনক। এটা আজ পরিষ্কার হয়ে গেল যে, শাসক দল পুঁজিপতি ও ব্যবসাদারদেরই ঋণ মকুব করে এবং বড়লোকদেরই সাহায্য করে। এটা গরিব-বিরোধী। সঙ্কটের সময় যাঁরা টাকা ধার দেন তাঁরা শোষণ করেন, সরকার নয়।’’
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত গাড়ির চালক, দিল্লিতে সিল করা হল সিআরপি-র সদর দফতর
একই সুর ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনেরও। তিনি বলছেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে টাকা নেওয়া উচিত নয়। তাঁরা এমনিতেই নানা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। কেন্দ্র যদি না পারে, তা হলে ঝাড়খণ্ড সরকার নিজেই টাকা মিটিয়ে দেবে। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে কখনই টাকা নেবে না।’’ পরিযায়ী শ্রমিক বা ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়াদের নিখরচায় বাড়ি পৌঁছে না দিতে পারলে, পিএম কেয়ার ফান্ড কিসের জন্য, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্য তবলিগ জামাতকেই দুষলেন যোগী
লকডাউনের জেরে ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিক, পুণ্যার্থী, পড়ুয়া-সহ অনেকেই। লকডাউনের মেয়াদ যত বাড়ছে ততই তীব্র হচ্ছে আটকে পড়া মানুষগুলির বাড়ি ফেরার আকুতি। এমন পরিস্থিতিতে ওই সব মানুষগুলিকে ঘরে ফেরানোর জন্য ‘শ্রমিক স্পেশাল’ চালানোর ঘোষণা করেছে রেলমন্ত্রক। ২ মে এ নিয়ে জারি করা হয় নির্দেশিকা। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল —
• সংশ্লিষ্ট রাজ্য ট্রেনে কত জন যাত্রী সফর করবেন তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে, শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের ধারণ ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে ওই সংখ্যা ১,২০০-র কাছাকাছি (অন্তত ৯০ শতাংশ) হওয়া উচিত।
• সংশ্লিষ্ট রাজ্য নির্দিষ্ট গন্তব্যের জন্য যাত্রী সংখ্যা যত বলবে, তেমনই টিকিট ছাপাবে রেল এবং তা রাজ্য প্রশাসনকে হস্তান্তরও করা হবে।
• রাজ্য প্রশাসন সেই টিকিট যাত্রীদের হাতে তুলে দেবে। তাঁদের থেকে ভাড়া সংগ্রহ করে পুরো টাকা রেলের হাতে তুলে দেবে।
নির্দেশিকার এই অংশ নিয়েই এখন বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)