প্রতীকী ছবি।
করোনা-বিপর্যয় রুখতে জারি হয়েছে লকডাউন। আবার এই লকডাউনই অনেক ক্ষেত্রে ডেকে আনছে পারিবারিক বিপর্যয়। একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, লকডাউন চলাকালীন বিভিন্ন রাজ্যের ‘রেড জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত অঞ্চলগুলিতে গার্হস্থ্য হিংসা ও সাইবার অপরাধের অভিযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ভারতের জাতীয় মহিলা কমিশন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এক সমীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। ২১ জুন ‘ইউএস ন্যাশনাল বুরো অব ইকনমিক রিসার্চ পেপার’-এ প্রকাশিত এই সমীক্ষায় এ-ও উঠে এসেছে, হেনস্থা, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের হার আবার অন্যান্য জ়োনগুলির তুলনায় রেড জ়োনে কম। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রেড জ়োনে বিধিনিষেধের কড়াকড়ি থাকায় বাড়ির বাইরে পা দেওয়ার সুযোগ নেই অপরাধপ্রবণদের। অন্য দিকে, গৃহবন্দি থেকে এরাই পরিবারের উপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে।
করোনা-সংক্রমণের মাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন রাজ্যে জেলাগুলিকে রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন— এই অঞ্চল বা জ়োনে ভাগ করেছে প্রশাসন। জাতীয় মহিলা কমিশন জানাচ্ছে, চলতি বছর মে মাসে মোট ৩৯২টি গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ জমা পড়েছে তাদের দফতরে। ২০১৯ সালে মে-তে জমা পড়েছিল ২৬৬ টি অভিযোগ। আবার এ বছর মহিলাদের জড়িয়ে সাইবার অপরাধের অভিযোগ জমা পড়েছে ৭৩টি। ২০১৯ সালের মে মাসে যা ছিল ৪৯টি। অন্য দিকে, ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার মতো অপরাধ ৬৬ শতাংশ কমেছে বলে জানাচ্ছে কমিশন। এই তথ্যের উপরে ভিত্তি করে গবেষকেরা দেখেছেন, রেড জ়োন প্রতি পারিবারিক হিংসার মাসিক গড় মার্চে ছিল ১.৫-এর নীচে। মে মাসে তা বেড়ে হয় ২। গ্রিন জ়োনগুলিতে এই গড় ০.৩-এর মধ্যে।
রেড জ়োনের তুলনায় গ্রিন জ়োনে এপ্রিল-মে মাসে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন ও হেনস্থা কমেছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতি রেড জ়োনে যৌন নির্যাতনের গড় মার্চে ০.৫, যা এপ্রিল-মে মাসে ০.১ থেকে ০.২-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করে। গবেষকদের ব্যাখ্যা, মেয়েরা মূলত রাস্তাঘাট, গণপরিবহণ বা কর্মক্ষেত্রে এই ধরনের অপরাধের শিকার হন। লকডাউনে সব বন্ধ থাকায় সেই সংখ্যা কমেছে। সমীক্ষায় আরও উঠে এসেছে, ‘পারিবারিক হিংসা’ ও ‘পারিবারিক হিংসা হেল্পলাইন’ এই শব্দবন্ধ লিখে গুগল সার্চ বেড়েছে মার্চের মাঝামাঝি।
আরও পড়ুন: গর্ভধারণে আইভিএফ কতটা কার্যকর?
আরও পড়ুন: রাজ্যপাল বনাম গহলৌত, দ্বন্দ্বে ঝুলে রাজস্থান