Lockdown

ঘরোয়া হিংসা বাড়ছে ঘরবন্দি দেশে

জাতীয় মহিলা কমিশনের রিপোর্ট বলছে, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁদের কাছে ই-মেলে আসা অভিযোগের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩০২ এবং ২৭০।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে দেশ জুড়ে লকডাউন। অফিস-কাছারি বন্ধ। বেসরকারি-সরকারি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু ঘরে বসে কাজ এবং বাইরে বেরোতে না-পারার ‘হতাশা’ গিয়ে পড়ছে বাড়ির মহিলাদের উপরে! চলছে অত্যাচার। জাতীয় মহিলা কমিশনের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এমনই জানানো হয়েছে।

Advertisement

জাতীয় মহিলা কমিশনের ওই রিপোর্ট বলছে, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁদের কাছে ই-মেলে আসা অভিযোগের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩০২ এবং ২৭০। এই পরিসংখ্যান পুরো মাসের। কিন্তু মার্চের ২৩ থেকে ৩০, এই আট দিনেই ২৯১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা মঙ্গলবার ফোনে জানান, ই-মেল ছাড়াও ডাকযোগে অভিযোগ আসে। এবং আশপাশের এলাকা থেকে মহিলারা দফতরে এসেও অভিযোগপত্র জমা দেন। কিন্তু লকডাউনের পর যে-টুকু অভিযোগ জমা পড়ছে, তা ই-মেলেই। তাতেই আট দিনে প্রায় ৩০০টি অভিযোগ যথেষ্ট উদ্বেগের বলে মনে করছে কমিশন।

জাতীয় মহিলা কমিশন জানাচ্ছে, এই অভিযোগের বেশির ভাগ পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য থেকে এসেছে। তবে কোন রাজ্য থেকে বেশি অভিযোগ আসছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। পশ্চিমবঙ্গের মহিলা কমিশন অবশ্য জানিয়েছে, লকডাউনে এ রাজ্যে মহিলাদের উপরে অত্যাচারের হার বৃদ্ধির কোনও ইঙ্গিত তাঁদের কাছে আসা অভিযোগে ধরা পড়েনি।
রাজ্য মহিলা কমিশন জানিয়েছে, মোবাইল ফোনে, ই-মেলের মাধ্যমে অভিযোগ আসছে। তবে তা অন্য মাসের থেকে বেশি নয়। কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের
বরং দাবি, অন্য সময়ে কমিশনের দেওয়া মোবাইল নম্বরে প্রচুর ফোন এলেও লকডাউনের পরে সেই সংখ্যা কমেছে।

Advertisement

এই সময়ে মহিলাদের উপরে অত্যাচার বৃদ্ধি ‘স্বাভাবিক’ বলে জানিয়েছেন সমাজকর্মী শাশ্বতী ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘এই আশঙ্কা ছিলই। ছেলেরা মনে করেন, সারা দিন বাড়িতে বসে থাকাটা মেয়েদের জন্য। ছেলেরা কোনও না কোনও কারণে বাইরে যাবেন। এই সময়ে তা একেবারে বন্ধ। ফলে সেই হতাশা তিনি স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের উপরে দেখাচ্ছেন।’’ লকডাউনের জেরে মেয়েদেরও কোথাও ‘পালিয়ে’ যাওয়ার নেই। দুইয়ে মিলিয়ে এই পরিস্থিতি, মনে করছেন শাশ্বতীদেবী।

আবার মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জয়রঞ্জন রামের কথায়, ‘‘অনেক পারিবারিক অশান্তি থাকে। কিন্তু সদস্যেরা বাইরে কাজে বেরিয়ে যাওয়ায় তার বহিঃপ্রকাশ ততটা ঘটে না। এখন ২৪ ঘণ্টা বাড়িতে বদ্ধ থাকতে গিয়ে পরিবারের প্রত্যেকেই বিরক্ত হয়ে উঠছেন। আর তার প্রকাশ ঘটলেই শুরু হচ্ছে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement