প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গের যাঁরা বিদেশে আটকে রয়েছেন, তাঁদের ফেরানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত সম্মতি জানাল রাজ্য সরকার। বিদেশ-ফেরতদের জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তার বিবরণ চিঠির মাধ্যমে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা এবং বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে জানিয়েছে রাজ্য। তবে নতুন সংক্রমণ এড়াতে রাজ্যের দু’টি অনুরোধ: কারা ফিরছেন, কেন্দ্র যেন সেই তথ্য আগাম জানায়। এবং বিদেশ থেকে ফেরানোর ক্ষেত্রে যেন কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের নির্ধারিত বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলা হয়।
ভিন্ রাজ্যে আটকে থাকাদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের মন্ত্রী-আমলা ও বিজেপি নেতাদের তরজা চলছে গত কিছু দিন ধরে। ব্যতিক্রম হয়নি এই ক্ষেত্রেও। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বৃহস্পতিবার রাতে টুইট করেন, “কেন্দ্রের বন্দে ভারত মিশন সব ভারতীয়ের জন্য। পশ্চিমবঙ্গবাসীদের জন্যও। তাঁদের ৩৭০০ জন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফেরার জন্য নাম লিখিয়েছেন।” পাল্টা টুইট করে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, বাংলার প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। বিজেপি মিথ্যাবাদী বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রাতে অবশ্য ফের টুইট করে রাজ্যের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনুরাগ।
নবান্ন সূত্রের খবর, লকডাউনে কমবেশি ১২ হাজার পশ্চিমবঙ্গবাসী বিদেশে আটকে। ফিরতে ইচ্ছুকদের ব্যাপারে রাজ্য কী ভাবছে, কেন্দ্র তা জানতে চেয়েছিল। কলকাতা বিমানবন্দরের কী পরিস্থিতি, সেখান দিয়ে তাঁদের ফেরানো সম্ভব কি না এবং আগতদের জন্য কী কী ব্যবস্থা থাকছে— এই তথ্যগুলি চেয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রকের প্রশাসনিক কর্তাদের ব্যাখ্যা, বিদেশ-ফেরতদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা (স্ক্রিনিং) করতে হবে। উপসর্গ থাকলে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে রাজ্যকে। কোনও উপসর্গ না-থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রাখতে হবে কোয়রান্টিনে। তার ব্যবস্থা করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: কেউ রাস্তায় হাঁটলে আদালত থামাবে কী করে? পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে মামলায় বলল শীর্ষ আদালত
কেন্দ্রকে রাজ্য জানিয়েছে, প্রশাসন কলকাতা বিমানবন্দর দিয়েই বিদেশে আটকদের ফেরাতে চায়। তার জন্য বিধি মোতাবেক পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। এ কাজে নোডাল অফিসার করা হয়েছে প্রধানসচিব পদমর্যাদার আইএএস অফিসার রাজেশ পাণ্ডেকে। ৭০০ ঘর-যুক্ত তিনটি ভবনকে নিভৃতবাসের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে। এগুলিতে নিখরচায় থাকা যাবে। আবার ১২টি হোটেলে ৭৩৮টি ঘরের বন্দোবস্ত রয়েছে। কেউ চাইলে নিজের খরচে সেখানে থাকতে পারবেন।
শুক্রবার রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর টুইট করেছে, “বিভিন্ন দেশে আটকে থাকাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রাজ্য। যাবতীয় প্রস্তুতির তথ্য কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছে।” বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে এ দিনই বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-মায়নমারে আটকে থাকা বহু পশ্চিমবঙ্গবাসীকে অনায়াসে স্থলপথে ফেরানো যায়। কিন্তু রাজ্য গা করছে না।