কমল নাথ।
রাজ্যপাল বলেছেন, সোমবারই করতে হবে আস্থা ভোট। সংখ্যা সঙ্গে নেই, তবু কমল নাথ বলছেন, ‘‘অল ইজ ওয়েল।’’
কোথা থেকে আসছে এই আত্মবিশ্বাস? কংগ্রেসের এক নেতা বললেন, ‘‘আমাদের কাছে আছে প্ল্যান এ, বি, সি। আর সকলের উপরে আছে করোনাভাইরাস।’’ করোনাভাইরাস কী তা হলে আপাতত মধ্যপ্রদেশের কমল নাথের সরকারের কাছে সঞ্জীবনী হয়ে উঠতে চলেছে? এর আড়ালেই কী আগামিকালের আস্থা ভোট এড়ানোর পরিকল্পনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী? সে ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশের লড়াই গড়াতে চলেছে আদালতে?
জয়পুর থেকে আজ সকালেই কংগ্রেসের বিধায়কদের ভোপালে আনা হয়েছে। এর পরেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে বসেন কমল নাথ। করোনাভাইরাস রুখতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নামার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের পর থেকেই মন্ত্রীরা ইঙ্গিত দিতে শুরু করেন, করোনার জেরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান বাতিল করছেন। এখন এটিই সবথেকে বেশি উদ্বেগের কারণ। বিকেল গড়াতেই কংগ্রেস বলেছে, ‘‘যে বিধায়কেরা জয়পুরে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ২ জনের করোনার লক্ষণ দেখা গিয়েছে। বিজেপির যে বিধায়কেরা হরিয়ানায় রয়েছেন, তাঁরা ফিরলেও পরীক্ষা হবে। বেঙ্গালুরুতে যাঁরা রয়েছেন, ফিরলে তাঁদেরও।’’
অথচ গতকাল গভীর রাতে রাজ্যপাল লালজি টন্ডন মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছেন, সোমবারই আস্থা ভোট দিতে হবে। তাঁর নির্দেশ, আগামিকাল তাঁর বক্তৃতার পরেই আস্থা ভোট করতে হবে। বোতাম টিপে ভোট হবে। ভিডিয়ো করতে হবে গোটা প্রক্রিয়ার আর সভা মুলতুবিও করা যাবে না। কিন্তু কমল নাথ ইতিমধ্যেই আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে রেখেছেন। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যপাল নির্দেশ দিতে পারেন না। বড়জোর বার্তা দিতে পারেন। বিধানসভার বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্ত স্পিকারেরই।
অথচ স্পিকার নর্মদাপ্রসাদ প্রজাপতি নিজের তাস খুলছেন না। আস্থা ভোট নিয়ে প্রশ্ন করলেই শুধু বলছেন, ‘‘আগামিকাল যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিধানসভাতেই হবে।’’ বিজেপি শিবিরের আশঙ্কা, আগামিকাল সভা শুরু হলে রাজ্যপাল বক্তৃতা দেবেন। তাঁকে বিদায় জানানোর পর করোনাভাইরাসের বিষয়টি সামনে রেখে স্পিকার সভা মুলতুবির সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। ফলে পিছিয়ে যেতে পারে আস্থা ভোট। সে ক্ষেত্রে কমল নাথ বাড়তি সময় পেয়ে যাবেন। কারণ, তাঁর পক্ষে সংখ্যা নেই। এখন বিজেপির বিধায়ক ভাঙাতে চাইছেন।
সে কারণেই আজ দিল্লিতে বিজেপির শিবরাজ সিংহ চৌহান, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, ধর্মেন্দ্র প্রধানরা বৈঠক করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার সঙ্গে। পরে গুরুগ্রামের হোটেলে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গেও কথা বলতে যান। দলের এক নেতার মতে, আগামিকালের মধ্যে সংখ্যা জোগাড় করতে না পারলে কমল নাথ আস্থা ভোট এড়াতে চাইবেন। তেমন হলে শুরু হবে আইনি লড়াই। রাজ্যপাল ও স্পিকার— কার এক্তিয়ার কতটা, তা নিয়েই বিবাদ পৌঁছবে আদালতে।
রাতে জারি করা আগামিকালের বিধানসভার কার্যসূচিতে অবশ্য রাখা হয়নি আস্থা ভোটের কথা।