ফাইল চিত্র।
দেশে হুহু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে মৃতের সংখ্যাও। ফের রেকর্ড গড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪৫ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে সংক্রমিতের সংখ্যা ১৪ হাজার ৮২১। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ২৫ হাজার ২৮২। মৃত ১৩,৬৯৯। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের আশঙ্কা, দেশে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে আর সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে রাশিয়াকে পিছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে পৌঁছে যেতে পারে ভারত।
করোনা-আক্রান্তের নিরিখে দিন দশেক আগে ব্রিটেনকে ছাপিয়ে ভারত চার নম্বরে উঠে এসেছে। সামনে আমেরিকা, ব্রাজিল এবং রাশিয়া। বর্তমানে রাশিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৯২ হাজারের কিছু বেশি। সেখানে দিনে গড়ে সাড়ে সাত হাজার জন নতুন করে কোভিড-১৯ রোগাক্রান্ত হচ্ছেন। ভারতে দিনে সংক্রমিতের সংখ্যা তার দ্বিগুণের বেশি। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকদের একাংশের মতে, সংক্রমণের এই হার বজায় থাকলে আর দিন দশেকেই রাশিয়াকে টপকে ভারত তৃতীয় স্থানে পৌঁছে যাবে। করোনা সংক্রমণের নিরিখে বিশ্বের প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাকে ছুঁয়ে ফেলতে ভারতের দু’মাসের বেশি লাগবে না বলে মনে করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একাংশ।
দেশে আক্রান্ত ৪,২৫,২৮২ মৃত ১৩,৬৯৯ সুস্থ ২,৩৭,১৯৫ (সোমবারের করোনা বুলেটিন। সূত্র: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক)
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক আজ দাবি করেছে, জনঘনত্ব বেশি হওয়া সত্ত্বেও ভারতে প্রতি এক লক্ষ মানুষ পিছু করোনা সংক্রমণের হার বিশ্বের অন্য দেশগুলির তুলনায় অনেক কম। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে প্রতি ১ লক্ষে করোনায় আক্রান্ত ৩০.০৪। বিশ্বে সেই সংখ্যাটা গড়ে ১১৪.৬৭। মন্ত্রকের দাবি, সুস্থতার হার প্রায় ৫৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৯২৫ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন আজ টুইট করে জানিয়েছেন, কলকাতার আইআইসিবি একটি সমীক্ষায় দেখেছে, করোনাভাইরাস নাক দিয়ে ঢুকে মস্তিষ্কের মেডালায় অবস্থিত রেসপিরেটরি সেন্টারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সেটাও মৃত্যুর অন্যতম কারণ হতে পারে। তাই সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষা করা যেতে পারে। তা ছাড়া, করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু হলে তাঁর সুরতহাল করে দেখা দরকার মস্তিষ্কে আদৌ সংক্রমণ হয়েছিল কিনা। তা হলে করোনা মোকাবিলার দিশা পাওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন: গুয়াহাটি নিয়ে চিন্তা বাড়ছে
ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) ফ্যাভিপিরাভির সমৃদ্ধ ‘ফ্যাবি ফ্লু’ এবং রেমডেসিভিয়ার তৈরি এবং বিক্রির ছাড়পত্র দিয়েছে। কিন্তু দেশের চিকিৎসকদের একাংশের মতে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটা ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ হলেও তা ‘গেম চেঞ্জার’ নয়। এই ওষুধগুলি কোভিড-১৯ চিকিৎসায় আমূল বদল আনতে পারবে বলে মনে হয় না।
আরও পড়ুন: করোনা-গুজবে প্রৌঢ়ার দেহ বাইরে পড়ে আট ঘণ্টা
করোনা সংক্রমণের নিরিখে দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্র প্রথম থেকেই শীর্ষে। তামিলনাড়ুকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দিল্লি। আজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল বলেন, ‘‘যে সব করোনা আক্রান্ত হোম-আইসোলেশনে রয়েছেন, তাঁদের জন্য বাড়িতে অক্সিমিটারের ব্যবস্থা করা হবে। আমরা খবর পাচ্ছি, অনেক করোনা-আক্রান্তের অক্সিজেনের পরিমাণ আচমকা কমে যাচ্ছে। এমন ঘটনা ঘটলে স্বাস্থ্য দফতরের সংশ্লিষ্ট দলকে জানালে, তারা নির্দিষ্ট বাড়িতে পৌঁছে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।’’ দিল্লির মন্ডোলী জেলের ১৭ জন বন্দি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
গোয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এই প্রথম এক জনের মৃত্যু হয়েছে। বেঙ্গালুরুতে আচমকা করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শহরে একাধিক জায়গায় লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।