ছবি : রয়টার্স।
গত কয়েক দিন ধরেই দেশে কোভিড আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। আজ করোনা সংক্রান্ত জাতীয় টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান তথা নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পল জানিয়েছেন, অতিমারির লেখচিত্র দু’-তিনটি রাজ্য বাদে বাকি দেশে নিম্নমুখী। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রেও জানানো হয়েছে, দেশে সংক্রমণের হার ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছে। উত্তর গোলার্ধের অধিকাংশ দেশে যেখানে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে, সেখানে ভারতে বিপরীতমুখী অবস্থা কিছুটা স্বস্তিদায়ক। নানাবিধ কন্টেনমেন্ট কৌশল ও নিয়মিত নজরদারির জেরেই এই সাফল্য বলে জানিয়েছেন পল। যদিও পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, দিল্লির মতো কিছু রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে কেন্দ্রের।
তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং টাস্ক ফোর্স যে দিন সংক্রমণের হার নিম্নমুখী বলে স্বস্তির কথা জানাল, সে দিনই আনলক ৬-এর নির্দেশিকা প্রকাশ না-করে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আনলক ৫-এর সময়সীমা নতুন করে বাড়াল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আর তাদের এই সিদ্ধান্তের পরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি নতুন করে সংক্রমণের ঢেউ আসার আশঙ্কা করছে কেন্দ্র?
এমন আশঙ্কার কারণও আছে বইকি! এ দিনই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর ডিজি বলরাম ভার্গব জানিয়েছেন, আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের শিকার হলে করোনায় মৃত্যুর হার বাড়তে পারে। রাজধানী দিল্লি তো বটেই, ভারতের বড় শহরগুলিতে দূষণের হার নিয়ে এমনিতেই উদ্বেগ বাড়ছে পরিবেশবিদদের। তার উপর শীতকালে দূষণের পরিমাণ বাড়ে। এই অবস্থায় আসন্ন শীতে বায়ুদূষণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে করোনায় মৃত্যুর হার বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের একাংশের।
আরও পড়ুন: ‘করোনা-ক্ষত রাজ্যের ভাঁড়ারে’
সেপ্টেম্বরে আনলক ৫-এ ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে সিনেমা হল খোলা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। বর্ধিত সময়সীমায় সেই সব নিয়মই বহাল থাকবে। ভোটমুখী বিহার ও যে সমস্ত কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে, সেখানে অনধিক ২০০ জন রাজনৈতিক জমায়েত করতে পারবেন। তবে যে-সমস্ত বিষয়গুলিতে আপাতত কেন্দ্রীয় অনুমোদন মিলেছে, তা শুধু কন্টেনমেন্ট এলাকার বাইরেই প্রযোজ্য। এ ছাড়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য কিংবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।
আরও পড়ুন: বৈঠকে মোদী, ফের দাওয়াই?
গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিতের সংখ্যা (৩৬,৩৭০) জুলাইয়ের মধ্যভাগের পরে সর্বনিম্ন। দৈনিক মৃতের সংখ্যাও বেশ কম (৪৮৮)। সেপ্টেম্বরে দেশে দৈনিক গড়ে ৯০ হাজার মানুষ করোনা-আক্রান্ত হচ্ছিলেন। সেপ্টেম্বরে মৃতের হার ১.৫%-এর আশপাশে থাকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড জয়ীর সংখ্যা (৬৩,৮৪২) সংক্রমিতের দ্বিগুণের কাছাকাছি। সুস্থতার হার পেরিয়েছে ৯০ শতাংশ। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬,২৫,৮৫৭।
কয়েক মাস আগে করোনা তাড়াতে ‘গো করোনা গো’ স্লোগান দেওয়া কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রামদাস আঠওয়ালে আজ সংক্রমিত হয়েছেন। তিনি দক্ষিণ মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি।