ত্রাণ নিয়ে আরএসএস-কে তোপ অখিলেশ যাদব। —ফাইল চিত্র
লকডাউনের জেরে গরিব, নিম্নবিত্তদের খাবার দিতে এগিয়ে আসছেন অনেকেই। বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, সরকারি সংস্থাও খাবারের বন্দোবস্ত করছে। কিন্তু সেই খাবার নিয়ে এ বার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলল সমাজবাদী পার্টি। অখিলেশ যাদবের অভিযোগ, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার দেওয়া ওই সব খাবার ‘মোদী প্যাকেট’-এ ভরে দেওয়া হচ্ছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। দাবি করা হচ্ছে, খাবার দেওয়া হচ্ছে আরএসএস-এর পক্ষ থেকে। রাজ্যে লকডাউনের নিয়মকানুন ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে না বলেও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে কাঠগড়ায় তুলেছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র তথা বিজেপির বিরুদ্ধে ত্রাণ নিয়ে রাজনীতির অভিযোগেও সরব অখিলেশ।
করোনাভাইরাস ও লকডাউনের জেরে দিন আনা দিন খাওয়া বহু মানুষের রোজগার বন্ধ। ফলে কার্যত খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে ওই সব পরিবারে। তাঁদের সাহায্যের জন্যও অবশ্য অনেকে এগিয়ে এসেছেন। ব্যক্তি, সংগঠন অনেকেই অর্থ বা খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছেন। কিন্তু অন্যের দান করা সেই সব সামগ্রীই নিজেদের বলে দাবি করছে আরএসএস— এমন অভিযোগে সরব হয়েছেন অখিলেশ।
মুলায়মপুত্র এ দিন তোপ দেগেছেন, ‘‘করোনাভাইরাসকে পরাজিত করতে সারা দেশ যখন একজোট হয়ে লড়ছে, বিজেপি সততার বদলে রাজনীতি করছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আরএসএস দাবি করছে, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া সামগ্রী তাঁদের নিজেদের। ‘মোদী ব্যাগ’-এ করে সেই সব সামগ্রী বিজেপি সমর্থক পরিবারগুলিতে ত্রাণ হিসেবে বিলি করা হচ্ছে। এটা ওদের মানসিক দৈন্যতার প্রকাশ। বিজেপি সরকার নির্বাচিত হয়েছে শুধু কি আরএসএস-এর অ্যাজেন্ডা প্রচার করার জন্য?’’
আরও পড়ুন: চিন থেকে বিশেষ বিমানে কলকাতায় এল সুরক্ষা সামগ্রী, মাস্ক তৈরির সরঞ্জাম
সরকারের নীতির সমালোচনা করে অখিলেশ এ দিন আরও বলেন, ‘‘লকডাউনকে সারা দেশের মানুষ সমর্থন করছেন। কিন্তু সরকারেরই নানা বিবৃতি মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। গরিব, মজুর শ্রেণির মানুষের স্বার্থে কিছুই করছে না সরকার।’’ একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে নিশানা করে অখিলেশ বলেন, ‘‘করোনার মোকাবিলায় ‘আগরা মডেল’কে প্রশংসা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু গাফিলতির জেরে সেই মডেল ফেল করেছে। রাজ্য সরকারের হেল্পলাইন নম্বর কাজ করছে না। লখনউয়ের মতো কিছু জেলাকে হটস্পট ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে লকডাউনের নিয়মই মানা হচ্ছে না। গরিব নিম্নবিত্ত মানুষ খাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাচ্ছেন না।’’
আরও পড়ুন: লকডাউন মানা হচ্ছে? বাজারে ভিড় কেমন? আচমকা পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় দল
কোনও জায়গায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলেই তার তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকা পুরোপুরি সিল করে দেওয়া হচ্ছিল। অনেকগুলি মেডিক্যাল টিম গঠন করে দ্রুত ওই পুরো এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে সদস্যদের থার্মাল স্ক্রিনিং করে সন্দেহভাজনদের কোভিড-১৯ টেস্টের ব্যবস্থা করেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। এটাই আগরা মডেল বলা হচ্ছে। করোনার মোকাবিলায় অনেক রাজ্যই ‘আগরা মডেল’কে অনুসরণ করছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও আগরায় সংক্রমণ বেড়েছে। তাই সেই মডেলের সাফল্য প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অখিলেশও সেই প্রশ্নই তুলেছেন। যদিও এ নিয়ে আরএসএস-এর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)