কুয়ালা লামপুর বিমানবন্দরে অপেক্ষারত যাত্রীরা।—ছবি রয়টার্স।
ভোরবেলা থেকে আমরা বসে আছি কুয়ালা লামপুরের বিমানবন্দরে। এসে শুনলাম ভারতে যাওয়ার সব বিমান বন্ধ। আমরা কী ভাবে দেশে ফিরব জানি না। এখনও আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি। কেউ বলছেন কাল একটা বিমানে আমাদের নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
ফিলিপাইন্সে এসেছিলাম ডাক্তারি পড়তে। আমি ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী। পরীক্ষা চলছিল। একটা মাত্র পরীক্ষা বাকি। ভেবেছিলাম, পরীক্ষা দিয়েই দেশে ফিরে যাব। কিন্তু হঠাৎ গতকাল এখানকার সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে বলে। কলেজ আমাদের নোটিস দেয় হস্টেল ছেড়ে দিতে হবে। এ দিকে ম্যানিলা শহর যে দ্বীপে, সেই দ্বীপ পুরো লক ডাউন করে দেওয়া হয়েছে। গণ পরিবহণ বন্ধ। বিমান পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে আমরা জানতে পারি। আমরা কোথায় থাকব? তাই একবেলার মধ্যে কোনওমতে টিকিট কাটি দেশে ফেরার। কিন্তু টিকিট পেয়েছি ভায়া কুয়ালা লামপুর। আজ ভোর পাঁচটা নাগাদ এখানে এসে জানতে পারি সব বিমান বন্ধ।
আমরা এখানে দুশো জন ভারতীয় ছাত্রছাত্রী আটকে আছি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমি একা। অসম এবং উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে আট জন আছেন। বাকি সবাই অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ু থেকে।
আরও পড়ুন: বাস থেকে মেট্রো, গণপরিবহণে করোনা সতর্কতা
আরও পড়ুন: সরকারি প্রতিষ্ঠানে করোনা-টেস্টের চাপ বাড়়ছে, দরজা খুলতে পারে বেসরকারি ল্যাবের
আমাদের হাতে বিশেষ টাকাও নেই। বিমানবন্দরে বেশি দাম দিয়ে খাবারও কিনতে পারছি না। খরচ করতে ভয় পাচ্ছি। জানি না কত দিন এ ভাবে আটকে থাকতে হবে। একটু আগে কলকাতায় বাবার সঙ্গে কথা হল। বাবা জানালেন, আমাদের সরকার কিছু ব্যবস্থা করবে। জানি না কবে করবে। ভারতীয় দূতাবাসের কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছি। জল নেই, খাবার নেই। পারলে আপনারা সরকারকে বলুন।
আটকে থাকা ছাত্রছাত্রীদের উদ্ধারে বিদেশমন্ত্রীর টুইট
(লেখিক কলকাতার বাসিন্দা)