উত্তরপ্রদেশে করোনা আক্রান্ত ৭ পরিযায়ী শ্রমিক। ছবি: এপি।
উত্তরপ্রদেশে এ বার সাত পরিযায়ী শ্রমিকের দেহে নোভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়ল। কর্মসূত্রে এত দিন মহারাষ্ট্রে ছিলেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় সরকার ঘরে ফেরার অনুমতি দিলে সম্প্রতি বাসে চেপে রাজ্যে ফেরেন। সেখানে একটি কোয়রান্টিন সেন্টারে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। ডাক্তারি পরীক্ষা করালে তাঁদের শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস ধরা পড়ে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে মহারাষ্ট্র থেকে এক দল শ্রমিক রাজ্যে ফেরেন। লখনউ থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূরে বস্তি জেলায় একটি কলেজের কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয় তাঁদের। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই সাত জন। ডাক্তারি পরীক্ষায় কোভিড-১৯ ধরা পড়লে তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের।
এই মুহূর্তে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই সাত জন। তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর কোয়রান্টিন সেন্টারটিকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। সংক্রমিতরা কার কার সংস্পর্শে এসেছিলেন তা জানার চেষ্টা চলছে, যাতে তাঁদের খুঁজে বার করে আইসোলেশনে পাঠানো যায়। এর আগে একসঙ্গে এত জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড নেই উত্তরপ্রদেশে।
আরও পড়ুন: খারাপ ও কম জিনিস দেওয়ার অভিযোগে রেশন ডিলারের বাড়িতে হামলা-আগুন মুর্শিদাবাদে
এ দেশে করোনাভাইরাস থাবা বসানোর পর গত ২৪ মার্চ মধ্যরাত থেকে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়েছেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোগাড় করতেও হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। উপায় না দেখে হাঁটাপথে বাড়ির উদ্দেশে রওনাও দিয়েছেন বহু মানুষ। তা করতে গিয়ে পথে প্রাণও হারিয়েছেন কয়েক জন।
এমন পরিস্থিতিতে গত ২০ এপ্রিল লকডাউন কিছুটা শিথিল হলে বাসে চেপে তাঁদের ফেরার অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তবে পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যের দাবিতে সায় দিয়ে শুক্রবার ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিক, পর্যটক, পুণ্যার্থী এবং পড়ুয়াদের ফেরাতে বিশেষ ট্রেন চলাচলেও অনুমতি দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে তারই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে সর্বত্র। তার মধ্যেই উত্তরপ্রদেশে সাত পরিযায়ী শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: দিল্লির সিআরপিএফ ক্যাম্পে ১২২ জন করোনা আক্রান্ত, উদ্বেগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
এই মুহূর্তে সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। কমপক্ষে ১২০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশই প্রথম পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হয়, সেখানে এই মুহূর্তে আক্রান্ত ২৩০০-র বেশি। ৪২ জন প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে।