একটি হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট হলকে অস্থায়ী আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে। সেখানেই খেলার জায়গা সাজাতে ব্যস্ত এক হোটেল কর্মী। বুধবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই
এক দিনে প্রায় ষোলো হাজার নতুন কোভিড রোগী। ভারতে মোট রোগীর সংখ্যা ৪.১০ লক্ষ ছিল গত রবিবার। আজ তা ৪.৫৬ লক্ষে পৌঁছল। অর্থাৎ ৪৫ হাজারেরও বেশি রোগী বাড়ল মাত্র ৩ দিনে। সেই সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৬৫ জনের মৃত্যু। নরেন্দ্র মোদী সরকারের চিন্তা বাড়ানোর মতো নিত্যনতুন নজির তৈরি হচ্ছে রোজ।
আজ সকালে দেওয়া পরিসংখ্যানে স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫,৯৬৮ জন নতুন রোগী মিলেছে গোটা দেশে। ৩,৭৮৮ জন রোগী বেড়েছে দিল্লিতে, বলছে সরকারি হিসেব। আজ রাত পর্যন্ত আসা নতুন সংক্রমণের হিসেব ধরলে দিল্লিতে মোট রোগীর সংখ্যা মুম্বইকেও ছাপিয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের দাবি।
৬ জুলাইয়ের মধ্যে দিল্লির প্রতিটি বাড়ির বাসিন্দাদের কোভিড পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৬১টি কন্টেনমেন্ট জ়োনে পরীক্ষা সেরে ফেলা হবে ৩০ জুনের মধ্যে।
দেশে আক্রান্ত
৪,৫৬,১৮৩
মৃত ১৪,৪৭৬
সুস্থ ২,৫৮,৬৮৪
(বুধবারের করোনা বুলেটিন। সূত্র: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক)
জেলা স্তর পর্যন্ত পুরো পরিকল্পনা ঢেলে সাজছে দিল্লি। টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্বে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল স্বয়ং। ডিসি পর্যায়ের পুলিশকর্তাদের মাঠে নামিয়ে কন্টেনমেন্ট এলাকায় সিসিটিভি-র মাধ্যমে নজরদারি ও বাসিন্দাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবা হয়েছে। রাজধানীর পরিস্থিতি সামলাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই সক্রিয় হয়েছেন। তা সত্ত্বেও উপরাজ্যপাল অনিল বৈজলের নানা নির্দেশ নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিরোধ বাধছে দিল্লি সরকারের। দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া বলেছেন, ‘‘এটা অমিত শাহের মডেলের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরীবালের মডেলের সংঘাতের সময় নয়। এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যাতে মানুষের সমস্যা না-হয়।’’ এর আগে কোভিড রোগীদের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনের নির্দেশ দিয়েও রাজ্যের আপত্তিতে তা ফিরিয়েছিলেন বৈজল। কিন্তু এ বার তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, সমস্ত রোগীকে সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতেই হবে। এই নির্দেশ প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়ে গত কাল বৈজলকে চিঠি লেখার পরে আজ অমিতকেও চিঠি পাঠান সিসৌদিয়া। লেখেন, রোগীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড় করানো অনুচিত। পরীক্ষা হোক রোগীর বাড়িতেই।
আরও পড়ুন: ৩ লক্ষ শিশুমৃত্যুর আশঙ্কা দেশে, বলছে ইউনিসেফ
দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১,৮৩,০২২। সুস্থের সংখ্যা অবশ্য আড়াই লক্ষ পেরিয়েছে। ২,১৫,১৯৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। আইসিএমআর বলেছে, সারা দেশে করোনার উপসর্গযুক্ত সমস্ত মানুষের পরীক্ষা করানো ও কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে জোর দেওয়া এখন অবশ্য প্রয়োজন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তাঁর প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, দ্রুত প্রশিক্ষণ দিয়ে এক লক্ষ ভাইরাস-স্ক্রিনিং টিম তৈরি করে ফেলতে হবে। হায়দরাবাদের সংস্থা হেটেরো এ দিন জানিয়েছে, তাদের তৈরি রেমডেসিভিয়ারের একটি ভায়ালের দাম হবে ৫৪০০ টাকা। আর এক সংস্থা সিপলা অবশ্য জানিয়েছে, তাদের ওষুধের দাম ৫০০০ টাকার নীচেই থাকবে। পতঞ্জলির ওষুধ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই তামিলনাড়ু সরকারের দাবি, উপসর্গহীন ও মৃদু উপসর্গের কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে সেই রাজ্যের প্রাচীন ‘সিদ্ধা’ চিকিৎসা পদ্ধতি ১০০ শতাংশ কাজ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘হার্ড ইমিউনিটি’ পেতে কত খেসারত?