Rag Pickers

বোতল কুড়িয়ে অর্থদান কোভিড ত্রাণে, জিলিপিও

মানুষের পাশে দাঁড়ানো, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া মিজো সমাজের বরাবরের দস্তুর।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ ও রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২১ ০৫:৫৯
Share:

জমানো টাকাপয়সার সঙ্গে জিলিপিও দিতে এসেছে ড্যানি লালনুনলুয়াংগা। নিজস্ব চিত্র

গরিব পরিবারের পেট চলে অর্ধাহারে। রোজগার বলতে মায়ের দিনমজুরি আর ছোট্ট দুই ছেলেমেয়ের প্লাস্টিক বোতল কুড়িয়ে পাওয়া নামমাত্র টাকা। সেই টাকা থেকেও আবার ভাইবোন লালরামপারি ও লাল্লামকিমা পিগি ব্যাঙ্কে টাকা জমাচ্ছিল। কিন্তু কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে মিজোরামবাসীর শোচনীয় অবস্থা, পূর্ণ লকডাউনে মানুষের কষ্ট দেখে সেই পিগি ব্যাঙ্ক ভেঙে ফেলল তারা। আইজলের কাছেই সালেম ভেঙ এলাকার বাসিন্দা লাল ও লাল্লা তাদের জমানো মোট ২১০০ টাকার পুরোটাই তুলে দিল কোভিড ত্রাণ তহবিলে। কোভিডের প্রথম ধাক্কার সময়, গত বছর তাদের মা-ও জমানো টাকা ত্রাণ তহবিলে তুলে দিয়েছিলেন।

Advertisement

একই এলাকার সাত বছরের বালক ড্যানি লালনুনলুয়াংগা শুধু তার জমানো নোট-কয়েনগুলিই তুলে দেয়নি ত্রাণ তহবিলে, নিজে জিলিপি খেতে ভালবাসে বলে, তার মতো কোনও জিলিপিপ্রেমী বাচ্চার জন্য হাতে করে দুটো জিলিপিও এনে ‘জমা’ দিয়েছে। এমন ভাবেই সাত বছরের ভানলালরুই, হ্যালে লালমালসাওমি, আট বছর বয়সি লালবিয়াখলুনি, ১১ বছরের ড্যানিয়েল ভানলালরিনাওমা ও ১২ বছরের লালরিনকিমিরা যথাসাধ্য সাহায্য তুলে দিয়েছে করোনা তহবিলে। বয়সে ছোটো হলেও অনেক বড় মনের পরিচয় দেওয়া এই শিশুদের অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা বলেন, “এই বাচ্চারাই আমাদের রাজ্যের ভবিষ্যৎ।”

মানুষের পাশে দাঁড়ানো, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া মিজো সমাজের বরাবরের দস্তুর। করোনার মধ্যে পড়শি দেশ মায়নমারে সেনার অত্যাচারে পালিয়ে আসা হাজার হাজার শরণার্থীকে মিজোরা নিজেদের দায়িত্ব ও খরচে আশ্রয় দিয়েছেন। কেন্দ্রের নিষেধের তোয়াক্কা করেননি তাঁরা। সরকারি সাহায্য ছাড়াই মানুষের বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছেন শরণার্থীরা। তাঁদের খাবার, ওষুধের ব্যবস্থা করছেন আম জনতা। মায়ানমারের শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ শিবির খুলে, রাস্তায় ঘুরে চাঁদা জোগাড় করছেন মিজোরা। আশ্রিতদের মধ্যে রয়েছেন মায়ানমারের ন্যাশনাল লিগ অব ডেমোক্রাসির ১৮ জন এমপি, প্রচুর পুলিশ ও দমকলকর্মী।

Advertisement

রাজ্যজুড়ে চলছে পূর্ণ লকডাউন। মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৩১ মে পর্যন্ত। কিন্তু কমছে না করোনার দাপট। শুক্রবার রাজ্যে সর্বাধিক ২৯৬ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মেলে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে আজ। সক্রিয় রোগী ২৩৪১ জন। মৃত ৩১ জন। দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াতে ও কোভিড রোগীদের আশ্রয় দিতে খুলে দেওয়া হয়েছে গির্জার দরজা। প্রশাসনকে সাহায্য করতে অনেকে নিজেদের গাড়ি কোভিডের কাজে ব্যবহারের জন্য সরকারের হাতে তুলে দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement