প্রতীকী ছবি।
করোনার সংক্রমণ রুখতে ১ মে থেকে ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের জন্য গণ-টিকাকরণ শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তবে এই কর্মসূচিতে স্থানীয়দের স্বস্তি মিললেও বিপাকে পড়েছেন যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে কর্মরত অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক থেকে চাকুরিরত।
যোগী সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, টিকা নিতে হলে উত্তরপ্রদেশের স্থানীয় বাসিন্দা হতে হবে। তার প্রমাণ হিসাবে আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা ভোটার কার্ড দেখিয়ে টিকাকরণের জন্য নাম নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। তবে স্বাভাবিক ভাবেই, দিল্লির আশপাশে উত্তরপ্রদেশের নয়ডা এবং গাজিয়াবাদে কর্মরতরা তা দেখাতে অপারগ। ফলে করোনার সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের মধ্যে রীতিমতো আশঙ্কায় দিন কাটছে তাঁদের। এই আশঙ্কার কথাই শোনা গিয়েছে ২৮ বছরের যুবক সুমিত রাজবংশীর কণ্ঠে। কর্মসূত্রে নয়ডায় থাকলেও সুমিতের বাড়ি আদতে মধ্যপ্রদেশে। রুজির টানে যোগী-রাজ্যে এসে করোনার আতঙ্কে রীতিমতো কোণঠাসা তিনি। এখনও পর্যন্ত করোনার টিকা নিতে পারেননি। সুমিত বলেন, “আমার মতো বহু পেশাদারই দিল্লি, এনসিআর বা নয়ডায় একই সমস্যায় ভুগছেন।” যোগী-রাজ্যের টিকা না পেয়ে এই মুহূর্তে নিজের রাজ্যেই ফিরে যাওয়ার কথা চিন্তা-ভাবনা করছেন তিনি।
টিকাকরণের জন্য আদিত্যনাথের নির্দেশ কতটা যৌক্তিক, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, টিকাকরণের জন্য কেবলমাত্র স্থানীয়রাই বিবেচিত হবেন, এমন কথা বলা নেই। বরং কোউইন অ্যাপের মাধ্যমে নাম নথিভুক্তির সময় যে কোনও রাজ্যের টিকাকরণ কেন্দ্রেই যেতে পারেন দেশের নাগরিক।
তবে উত্তরপ্রদেশ সরকারের দাবি, টিকাকরণের জন্য উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দারাও নাম লিখিয়েছেন। এর জেরে নিজেদের বাসিন্দাদের টিকা থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে ন্যাশনাল হেল্থ মিশনের ডিরেক্টর অপর্ণা উপাধ্যায়কে একটি চিঠিও লিখেছে যোগী সরকার। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, নয়ডা এবং গাজিয়াবাদে দৈনিক ৫-৬ হাজার টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করছে সরকার। তবে তা ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য নয়। সরকারি টাকায় নিজেদের বাসিন্দাদেরই টিকা দিতে চায় যোগী সরকার। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সে কারণেই এই নির্দেশিকা জারি করেছেন যোগী আদিত্যনাথ।