কোভি়ড রোগীদের সামাজিক কলঙ্কের মুখে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। ছবি: সংগৃহীত।
কোভিড রোগীদের চিহ্নিতকরণের জন্য তাঁদের বাড়ির বাইরে কোনও পোস্টার লাগানো হবে না। যাঁদের বাড়িতে ইতিমধ্যেই পোস্টার রয়েছে, তা-ও সরিয়ে ফেলা হবে। এই মর্মে শীঘ্রই সার্কুলার জারি করবে দিল্লি সরকার। মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টে এমনটাই জানিয়েছে অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ) সরকার।
করোনায় আক্রান্তদের চিহ্নিতকরণের জন্য তাঁদের বাড়ির বাইরে পোস্টার লাগানো নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন দিল্লির আইনজীবী কুশ কালরা। হাইকোর্টের কাছে আবেদনে তাঁর দাবি, দিল্লি সরকারের এই ব্যবস্থা সংক্রমিতদের ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপ করার শামিল। যা তাঁদের ওই অধিকার (রাইট টু প্রিভেসি) ভঙ্গ করছে। এমনকি, সংবিধানের ২১ নম্বর ধারায় জীবন এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার সুরক্ষিত অধিকারেও তা হানা দিচ্ছে।
আবেদনকারীর যুক্তি মেনে নিয়েছে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি হিমা কোহালি এবং বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যন প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চ। এ দিন কেজরীবাল সরকারকে ওই পোস্টার সরানোর জন্যও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি, প্রশাসন যাতে সংক্রমিতদের পরিচয় কোনও ভাবেই প্রকাশ না করে বা কোনও সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে তা ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে।
আরও পড়ুন: চিনকে চাপে ফেলে বঙ্গোপসাগরে মালবার নৌ মহড়া শুরু চতুর্দেশীয় অক্ষের
আবেদনকারী কুশ কালরা আদালতে জানিয়েছিলেন, রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনস (আরওএ'স)-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে কোভিড রোগীদের নাম ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে তাঁদের সামাজিক কলঙ্কের মুখে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। এমনকি, তাঁরা অহেতুক লোকচক্ষুর নজরে এসে যাচ্ছেন। তাঁর অনুরোধ, “কোভিড-১৯ রোগীদের লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে শান্তিতে সুস্থ হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া উচিত।”
আরও পড়ুন: ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’-র প্রশ্নে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত! অমিতাভের বিরুদ্ধে এফআইআর বিজেপি নেতার
এ দিনের শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, কোভিড রোগীদের চিহ্নিতকরণের জন্য তাঁদের বাড়ির বাইরে পোস্টার লাগানো নিয়ে কোনও সরকারি সার্কুলারও জারি করা হয়নি। তা সত্ত্বেও এই ব্যবস্থাপনা দেখা যাচ্ছে। এর জবাবে আদালতে দিল্লি সরকারের অ্যাডিশনাল স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল আইনজীবী সত্যকাম জানিয়েছেন, সরকারি সার্কুলার জারি না করা হলেও ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ৭ অক্টোবর সমস্ত নোডাল অফিসারকে ইমেল করে সংক্রমিতদের বাড়ির বাইরে পোস্টার লাগানো বন্ধ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, যাঁদের বাড়িতে ইতিমধ্যে পোস্টার পড়ে গিয়েছে, সেগুলিও অবিলম্বে সরানোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোভিড রোগীদের নাম প্রকাশ করা নিয়ে আধিকারিকদের কাছে দিল্লি সরকারের তরফে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।