National News

‘অবিচার’ বলছেন অধীর, ‘হঠকারী’, মত সৌগতের, এমপি ল্যাডের বরাদ্দ স্থগিতে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা

তবে অনেকে সিদ্ধান্তকে স্বাগতও জানিয়েছেন। যেমন কংগ্রেসেরই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ, সাংসদ আহমেদ পটেল সেই তালিকায় রয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ২০:৫১
Share:

শশী তারুর, সৌগত রায় ও অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র

করোনাভাইরাসের জেরে অভূতপূর্ব বিপর্যয়ের মুখে দেশের অর্থনীতি। মোকাবিলায় এক বছরের জন্য মন্ত্রী-সাংসদদের বেতনের ৩০ শতাংশ কেটে নেওয়ার পাশাপাশি দু’বছরের জন্য সাংসদদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল(এমপি ল্যাড)-এর টাকাও বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। এই টাকা একটি ‘কনসোলিডেটেড ফান্ড’-এ যাবে এবং করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় তা বরাদ্দ করা হবে। কেন্দ্রের প্রথম সিদ্ধান্ত নিয়ে কারও আপত্তি না থাকলেও এমপি ল্যাড-এর টাকা বরাদ্দ বন্ধ করা নিয়ে আপত্তি তুললেন অনেকেই।

Advertisement

কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরীর মতে, এই সিদ্ধান্ত ‘জনপ্রতিনিধিদের প্রতি অবিচার’। মন্ত্রী-সাংসদদের বেতনের ৩০ শতাংশ কেটে নেওয়া নিয়ে কোনও আপত্তি না তুললেও আরেক কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের বক্তব্য, সাংসদদের এলাকার উন্নয়ন খাতের টাকা এ ভাবে কেন্দ্রের হাতে খরচ করার অধিকার দেওয়ায় সমস্যা বাড়বে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের মতে, এই সিদ্ধান্ত ‘হঠকারী’ ও ‘অগণতান্ত্রিক’।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে একটি অধ্যাদেশে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘১৯৫৪ সালের মন্ত্রী-সাংসসদদের বেতন, ভাতা ও পেনশন আইনে পরিবর্তন আনতে অধ্যাদেশ জারি হয়েছে। আগামী দু’বছরের জন্য সাংসদদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা বরাদ্দ করা হবে না।’’

Advertisement

কেন্দ্রের এই ঘোষণার পরেই বিশেষ করে বিরোধী দলের সাংসদদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এ নিয়ে অনেকেই ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর। বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর টুইট, ‘‘এমপি ল্যাড-এর টাকা তুলে নেওয়ার অর্থ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও ভোটারদের প্রতি অবিচার। কারণ এলাকার মানুষের চাহিদা অনুযায়ী ওই অর্থ খরচ করার স্বাধীনতা ভোগ করেন সাংসদরা।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এই সিদ্ধান্তের ফলে স্পষ্ট যে, আর্থিক জরুরি অবস্থার দিকে এগোচ্ছে দেশ। সাংসদদের বেতন আরও কেটে নিন, কিন্তু এমপি ল্যাডের টাকা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করুন।’’

আরও পড়ুন: দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ ৭০৪ জনের, আক্রান্ত বেড়ে ৪২৮১, মৃত ১১১

পর পর করা টুইটে কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর লিখেছেন, ‘‘সাংসদদের বেতন ও পেনশন কাটার সিদ্ধান্তকে স্বাগত। সারা দেশের মানুষ যে কষ্ট স্বীকার করছেন, তার পাশে দাঁড়ানোর এটা খুব ভাল উপায়। কিন্তু দু’বছরের জন্য সাংসদদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা বরাদ্দ বাতিল এবং সেই টাকা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনও ফান্ডে দিয়ে দেওয়াটা সমস্যার।’’

কেন সমস্যার? ওই অর্থ বণ্টনে অসাম্য ও পক্ষপাতিত্ব হবে বলে অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ। শশী উদাহরণ দিয়েছেন, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য কেরল সরকারকে ১৫৭ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র, যেখানে ৩১৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৬৬২ কোটি। অথচ সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১২২। এমপি ল্যাডের টাকাতেও সেই ভারসাম্যহীনতা হবে না তো?’’

আরও পড়ুন: লকডাউনের মেয়াদ কি আরও বাড়বে? মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর জল্পনা তুঙ্গে

সংক্ষিপ্ত হলেও তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া এ রাজ্যের দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ের। কোনও রাখঢাক না করেই তাঁর টুইট, ‘‘দু’ বছরের জন্য এমপি ল্যাড স্থগিত করে দেওয়ার সরাসরি বিরোধিতা করছি। এটা হঠকারী ও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত।’’

সাংসদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলে প্রতি বছর ৫ কোটি করে টাকা দেওয়া হয় সাংসদদের। নিজেদের এলাকার মানুষের চাহিদা অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ওই টাকা খরচ করেন সাংসদরা। কিন্তু সরকারের এ দিনের সিদ্ধান্তের জেরে দু’বছরে ১০ কোটি টাকা সেই খাতে পাবেন না সাংসদরা। সেই টাকা একটি কেন্দ্রীয় তহবিলে জমা হবে এবং তা খরচ করবে কেন্দ্র।

তবে বিরোধিতার পাশাপাশি অনেকে সিদ্ধান্তকে স্বাগতও জানিয়েছেন, যেমন কংগ্রেসেরই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ, সাংসদ আহমেদ পটেল সেই তালিকায় রয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement