Coronavirus

কোভিড টিকা এলেই নিশ্চিন্ত? আশার কথা শোনাতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা

২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত করোনা মোকাবিলার সব রকম পরিকল্পনা সরকারের করে রাখা উচিত বলেও মনে করেন চিকিৎসক এস কে সারিন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ২০:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনাভাইরাসের টিকা কবে আসবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। কিন্তু তার আগেই এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে ঢিলেঢালা মনোভাব। না দূরত্ব মানছেন, না মাস্ক পরছেন। আর যাঁরা এক বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা তো ধরেই নিয়েছেন যে, অন্তত ৫-৬ মাস নিশ্চিন্ত। অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। ফলে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু এ নিয়ে ফের সতর্ক করলেন দিল্লির চিকিৎসক তথা করোনা নিয়ন্ত্রণে অরবিন্দ কেজরীবালের গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রধান এস কে সারিন। তাঁর বক্তব্য, এক বার করোনা সংক্রমণ হলেই দীর্ঘদিন শরীরে অ্যান্টিবডি থেকে যাবে, এমনটা নয়। একই সঙ্গে ২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত করোনা মোকাবিলার সব রকম পরিকল্পনা সরকারের করে রাখা উচিত বলেও মনে করেন চিকিৎসক সারিন।

Advertisement

কেন এমন বলছেন চিকিৎসক দিল্লির ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সেস-এর ডিরেক্টর সারিন? একটি সর্বভারতীয় সংবামাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা গুরুতর কোভিড আক্রান্ত, তাঁদেরই পর্যাপ্ত ইমিউনিটি বা অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। অল্প আক্রান্ত বা উপসর্গহীনদের ততটা নয়, যতখানি দ্বিতীয় বার কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন। সারিন বলেন, ‘‘সুতরাং কোভিড আক্রান্ত হলেই পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, এই ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’’

তা হলে টিকা এসে গেলে তো নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে? চিকিৎসক সারিন সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘অন্তত ২০২১-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত এখনকার মতোই দূরত্ববিধি, মাস্ক পরার অভ্যাস চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ, করোনার টিকা এলেও তাতে ইমিউনিটি তৈরি হবে ৪ থেকে ৬ মাসের। খুব বেশি হলে ৮ মাসের জন্য। তার পর? তার পর আবার সংক্রমণের সম্ভাবনা। তা ছাড়া টিকার কার্যকারিতা বুঝতেও কয়েক মাস সময় লেগে যাবে। ফলে ওই সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে যেমন প্রস্তুতি নিতে হবে করোনাকে সঙ্গী করে চলার, তেমনই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং প্রশাসনকেও সেই ভাবেই এগোতে হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘আমার পূর্বপুরুষ ভারতে ছিলেন’, চেন্নাই-কলকাতায় বাইডেনদের খোঁজে

দিল্লিতে সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছে। প্রতিদিন ৫ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই জল্পনা চলছে, সেখানে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। উঠে আসছে গোষ্ঠী সংক্রমণের তত্ত্বও। এ বিষয়ে সারিন জানান, গোষ্ঠী সংক্রমণের অর্থ, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি সংক্রমণের উৎস জানতে পারবেন না। অর্থাৎ, কারও সংস্পর্শে না এসেও সংক্রমিত হতে পারেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখন আমরা এই ধরনের রোগী অনেক পাচ্ছি। ফলে এটা ধরে নেওয়া যায় যে, গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে। তবে সেটা স্থানীয় স্তরেও হতে পারে। যেমন, কোনও একটি মহল্লা বা একটি ওয়ার্ডের কিছু অংশ— এমনও হতে পারে।’’

আরও পড়ুন: ‘মধ্যবিত্ত’ জো বাইডেনের সম্পত্তির পরিমাণ কত জানেন?

তাই অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের মতো সারিনও বলেছেন, মাস্কের কোনও বিকল্প নেই। সংক্রমণ রুখতে মাস্কই একমাত্র হাতিয়ার। তিনি জানিয়েছেন, একজন মানুষ এক মিনিট খালি মুখে কথা বললেই ছড়িয়ে পড়ে ১০০০ ড্রপলেট। তিনি বলেন, ‘‘মনে রাখবেন, চেঁচামেচি, হাঁচি-কাশি বা গান গাওয়া নয়, শুধুমাত্র কথা বলা থেকেই এই পরিমাণ ড্রপলেট ছড়ায়। কিন্তু মাস্ক পরলে সেই ড্রপলেট ছড়াবে না।’’ এমনকি, বাড়িতেও মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন সারিন। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে কারও সর্দি-কাশি বা জ্বর হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। এমনকি, কোভিড টেস্টের ফল নেগেটিভ এলেও পরতে হবে। কারণ আমরা এমন অনেক নজির পেয়েছি, যেখানে সর্দি-কাশি হওয়া ব্যক্তি নেগেটিভ, কিন্তু সেই পরিবারেরই সদস্য উপসর্গহীন কোভিড পজিটিভ। তাই বাড়িতেও মাস্ক পরে থাকলেই ভাল।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement