প্রতীকী ছবি।
শুক্রবারও দেশের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় নতুন রেকর্ড করেছে দেশ। এ দিন সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া হিসেবে দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ। তা ছাড়া প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতেও একটি সমীক্ষায় দাবি করা হল, ২১ মে-র মধ্যেই করোনাভাইরাস মুক্ত হবে ভারত! এর পাশাপাশি কোন রাজ্যে সর্বোচ্চ কত আক্রান্ত হতে পারে, তারও একটা হিসেব দিয়েছে ‘দ্য এন্ড ইজ নিয়ার’ নামে ওই সমীক্ষা।
মুম্বই স্কুল অব ইকনমিকস অ্যান্ড পাবলিক পলিসির ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, অধিকাংশ রাজ্যে করোনার প্রকোপ কমে এসেছে। তবে এই সাফল্য ধরে রাখতে গেলে ৭ মে পর্যন্ত লকডাউন কেমন হচ্ছে, তা অত্যন্ত জরুরি। সমীক্ষায় আরও দাবি, ৭ মে-র মধ্যেই অনেক রাজ্যে নতুন কেউ আক্রান্ত হবে না। তবে দেশের কোথাও কোনও নতুন সংক্রমণ হবে না, এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছতে সময় লাগবে ২১ মে পর্যন্ত।
এর পাশাপাশি কোন রাজ্যে সর্বোচ্চ কত সংখ্যক কোভিড পজিটিভ রোগী হতে পারেন, তার একটা পরিসংখ্যানও দিয়েছে ওই সমীক্ষা। সেই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র, যে রাজ্য এখনও আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় সবার উপরে। সেই মহারাষ্ট্রে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছতে পারে ২৪২২২। এর পর গুজরাতে ৪৮৩৩, দিল্লিতে ৩৭৪৪, উত্তরপ্রদেশে উত্তরপ্রদেশ ৩১৮২, রাজস্থানে ২৮০৮ এবং মধ্যপ্রদেশে ২৪৩২। পশ্চিমবঙ্গে সর্বোচ্চ আক্রান্ত হতে পারেন ২১৭৩ জন।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
সমীক্ষায় তথ্য নেওয়া হয়েছে চিন অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো দেশ থেকে, যেগুলি ইতিমধ্যেই করোনামুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাস কী হারে বাড়ছে, কী হারে কমছে এবং তার সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা ও অন্যান্য তথ্য পরিসংখ্যান মিলিয়ে দেখা হয়েছে। কত দিনের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আসছে বা কেউ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন না, তাও বিশ্লেষণ করে দেখেছেন সমীক্ষকরা।
একটা নিয়ন্ত্রিত এলাকার মধ্যে কী ভাবে ভাইরাস তথা জীবাণুর বংশবৃদ্ধি হয় বা ছড়ায়, তেমন একটি মডেলকে অনুসরণ করা হয়েছে এই সমীক্ষায়। কোনও সংক্রমিত এলাকায় ভাইরাস সর্বোচ্চ কত জনকে সংক্রমিত করতে পারে এবং তার পর সংক্রমণ বন্ধ হয়ে যায়, তার একটা চিত্র পাওয়া যায় ওই মডেলে। এই পদ্ধতিতেই সমীক্ষায় দেখা হয়েছে, কত সময়ের মধ্যে সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে এবং কত সময়ের মধ্যে বন্ধ হচ্ছে। বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে ‘নিয়ন্ত্রিত’ এলাকার উপর। অর্থাৎ লকডাউন এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে চিন, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো যে সব দেশ থেকে তথ্য পরিংসংখ্যান নেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে ভারতের আবহাওয়া, এখানকার লোকজনের জিনের গঠন— এ সব অনেক কিছুই আলাদা। সেক্ষেত্রে সমীক্ষার ফলাফলে তারতম্য হতে পারে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্র বলল, বাংলায় ১০টি রেড জোন, প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্য বলল ৪
সমীক্ষক দলের প্রধান নীরাজ হাটেকর এবং পল্লবী বেহলকার বলেছেন, আক্রান্তের গ্রাফ বিচার করে ইংরেজি ‘এস’ অক্ষরের মতো একটি আকার পাওয়া গিয়েছে। এর অর্থ, প্রাথমিক পর্যায়ে যখন ধীরে ধীরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর পর দ্রুতগতিতে বেড়ে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছচ্ছে এবং তার পর ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে সংক্রমণ। তার পর ভূমির সঙ্গে সমান্তরাল যে রেখা, সেটা হল নতুন কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন না, তার সঙ্কেত।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যায় নতুন রেকর্ড দেশে
তবে সমীক্ষকদের মতে ঝুঁকিও রয়েছে। বিপুল সংখ্যক যে পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্যে আটকে রয়েছেন, তাঁরা ঘরে ফেরার পর নতুন সংক্রমণের খবর আসতে পারে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মূলত শহরকেন্দ্রিক হলেও এই পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফেরার পর গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ। হতে পারে সেটা দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ। তবে সব মিলিয়ে একটাই আশার কথা, সমীক্ষকদের দাবি সত্যি হলে ২১ মে-র পর দেশের আর কেউ নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হবেন না।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।