গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
গাছে উঠে কাঁঠাল পাড়তে গিয়ে আহত হয়েছিলেন। তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানতে পারলেন, তিনি করোনার শিকার। কেরলের কাসরগোড় জেলার এক অটোরিকশাচালক এমনই অদ্ভুত ভাবে জানতে পেরেছেন তাঁর কোভিড-পজিটিভ হওয়ার কথা।
কেরলের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আক্রান্ত ব্যক্তি পেশায় অটোচালক। কাসরগোড়ে বেলুড়ের ওই বাসিন্দা সম্প্রতি গাছে উঠেছিলেন কাঁঠাল পাড়তে। সে সময় আচমকাই তাঁর মাথায় একটি কাঁঠাল ভেঙে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে কান্নুরের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, মেরুদণ্ডে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন ওই অটোচালক। শীঘ্রই তাঁর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী ওই অটোচালকের কোভিড-১৯ টেস্ট করানো হয়। সে সময়ই জানা যায়, আহত ব্যক্তির দেহে করোনার সংক্রমণ ঘটেছে।
কান্নুরের ওই হাসপাতাল সুপার কে সুদীপ জানিয়েছেন, মাথায় কাঁঠাল পড়ে মেরুদণ্ডে চোট লাগায় হাত এবং পা দুর্বল হয়ে গিয়েছিল ওই অটোচালকের। অস্ত্রোপচার ছাড়া তাঁর সেরে ওঠার কোনও উপায় ছিল না। তাঁর কথায়, “আমাদের প্রোটোকল অনুযায়ী, অস্ত্রোপচারের আগে সমস্ত রোগীর কোভিড-টেস্ট করানো হয়। সেই নিয়ম মেনেই ওই ব্যক্তিরও কোভিড-টেস্ট করানো হয়েছিল। টেস্ট রিপোর্টে ধরে পড়ে, আহত ব্যক্তি কোভিড পজিটিভ।”
আরও পড়ুন: উহানের ল্যাবে করোনাভাইরাস ছিল, কিন্তু কোভিড-১৯-এর সঙ্গে তার মিল নেই, দাবি চিনা গবেষকের
ওই অটোচালকের দেহে করোনার উপসর্গ ছিল বলেও জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে কী ভাবে তিনি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলেন, তা এখনও জানা যায়নি। হাসপাতালের সুপার বলেন, “সাম্প্রতিক কালে দেশের বাইরে যাননি ওই অটোচালক। এমনকি, কোন কোভিড-পজিটিভের সংস্পর্শেও আসেননি বলে তাঁর দাবি। আমরা নিশ্চিত করে এটা বলতে পারছি না, কী ভাবে তাঁর দেহে সংক্রমণ ঘটেছে। এটাও বোঝা যাচ্ছে না যে তাঁর অটোতে ওঠা কোনও ব্যক্তির থেকে সংক্রমিত হয়েছেন কি না। তবে এটা জানা গিয়েছে যে, এক বার জেলা হাসপাতালে গিয়েছিলেন ওই অটোচালক। সেখান থেকেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। আমরা সব কিছুই খতিয়ে দেখছি।”
আরও পড়ুন: দেশীয় উড়ান চালু করাটা ‘অতি কুপরামর্শ’, মত মহারাষ্ট্র সরকারের
স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ওই অটোচালকের পরিবারের সদস্যদের কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, তাঁর সংস্পর্শে আসা লোকজনেরও খোঁজখবর করা হচ্ছে।
দেশের অন্য রাজ্যের তুলনায় কেরলের করোনা-পরিস্থিতি সন্তোষজনক হলেও গত চার দিনে সে রাজ্যে ১০৪ জন করোনা-পজিটিভের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তবে কী ভাবে ওই অটোচালকের দেহে সংক্রমণ ঘটল, তা খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দফতরও। যদিও কেরল সরকারের দাবি, রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি।