প্রতীকী ছবি
খড়্গপুরের আরও এক করোনা-আক্রান্ত রেলরক্ষীকে করোনা হাসপাতালে রাখা নিয়ে শুরু হয়েছে রেল-রাজ্য সংঘাত।
ওই জওয়ানকে কোন করোনা হাসপাতালে রাখা যায়, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের মতামত পাওয়া যায়নি বলেই অভিযোগ রেলের। ফলে আপাতত খড়গপুর রেল হাসপাতালের কোভিড আইসোলেশনে ভর্তি রয়েছেন ওই রেলরক্ষী। এর আগে খড়্গপুরের ৬ জন করোনা আক্রান্ত রেলরক্ষীকে পাঁশকুড়ার বড়মা করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তা হলে নতুন করে আক্রান্তের ঠাঁই হবে না কেন? পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘এখানে করোনা চিকিৎসার জন্য লেভেল-৩ হাসপাতাল পূর্ব মেদিনীপুরের বড়মা। সেখান থেকে জানিয়েছে, রেলের উচিত ওঁদের রোগীদের জন্য নিজস্ব পরিকাঠামো গড়ে চিকিৎসা করা। তা ছাড়া, লক্ষণহীন রোগীদের জন্য আইসোলেশনই যথেষ্ট।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতোই আমরা পদক্ষেপ করছি।’’
খড়্গপুর শহরের নিউ সেটলমেন্টে রেলের কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকা ওই রেলরক্ষীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে বৃহস্পতিবার রাতে। তবে তাঁর করোনা উপসর্গ ছিল না। রিপোর্ট পেয়েই ওই জওয়ানকে কোন করোনা হাসপাতালে পাঠানো হবে, তা রেলের পক্ষ থেকে রাজ্যের কাছে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু রেলের দাবি, রাজ্য কোনও মতামত জানায়নি। শেষে রাতে জওয়ানকে খড়্গপুরে রেলের প্রধান হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়।
রেলের দাবি, শুক্রবার সকালেও রাজ্যকে চিঠি পাঠানো হলেও রাত পর্যন্ত সেই চিঠির জবাব আসেনি। বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্য প্রশাসনের তরফে রেল হাসপাতাল সংলগ্ন সাউথ সাইডের রাস্তা ঘিরে দেওয়া হয়। খড়্গপুরের ডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান বলেন, ‘‘আরপিএফ করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে তাঁর চিকিৎসার বিষয়ে বার বার রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছি। চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু রাজ্যের থেকে কিছু জানানো হয়নি। বাধ্য হয়ে আক্রান্তকে নিজেদের হাসপাতালের কোভিড আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখেছি।” ওই রেল কর্তার অভিযোগ, হাসপাতালের সামনের রাস্তা ঘিরে দেওয়ায় রোগী ও চিকিৎসক-কর্মীদের সমস্যা হচ্ছে। আর খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী জানান, করোনা আক্রান্ত রোগী রেল হাসপাতালে থাকায় এলাকায় অবাঞ্ছিত চলাচল ঠেকাতে প্রথমে রাস্তা ঘেরা হয়েছিল। ডিআরএম আপত্তি জানানোয় রাস্তার ঘেরাটোপ খুলে হাসপাতাল ঘেরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে ১৭ মে পর্যন্ত বাড়ল লকডাউনের মেয়াদ
আরও পড়ুন: সামাজিক দূরত্ব মেনেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেন, সায় দিল কেন্দ্র
রেল মন্ত্রক থেকে খড়্গপুরে রেলের প্রধান হাসপাতালকে কোভিড লেভেল-২ হাসপাতাল করতে বলা হয়েছে। তা করা হয়নি| শুধু জরুরি বিভাগটিকে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়েছে। সেখানকার পরিকাঠামোয় করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা কী ভাবে সম্ভব? রেলের চিফ মেডিক্যাল সুপার এস এ নাজমি বলেন, ‘‘করোনা আইসোলেশনের পরিকাঠামো গড়া হয়েছে। কিন্তু পজিটিভ রোগীকে রেখে চিকিৎসা কী ভাবে হবে, তা রাজ্য কিছু বলছে না। রাজ্য এই পজিটিভ রোগীকে নিতেও চাইছে না। কী আর করব!’’ ডিআরএম মনোরঞ্জন বলেন, ‘‘রেল মন্ত্রক পরামর্শ দিতেই পারে। কিন্তু করোনা চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। আমাদের রাজ্য থেকে করোনা হাসপাতাল গড়ার কথা কিছুই বলা হয়নি। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কী হবে?"