ছবি: সংগৃহীত।
জনতার কার্ফুতে স্তব্ধ থাকল দেশ। কিন্তু এখনও পুরোদমে চলছে সংসদের বাজেট অধিবেশন। প্রশ্ন উঠেছে— আর কত দিন?
সূত্রের খবর, সোমবারের পর সংসদের চলতি অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বিষয়টি নিয়ে মতামত জানতে সংসদ বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী আজ ফোন করেছিলেন তৃণমূলের লোকসভা নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁকে সুদীপ জানান, করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে সংসদ চালানো
যে অনুচিত, প্রথম দিন থেকেই তাঁরা বলছেন। তাঁদের একটি চিঠিও স্পিকারের হাতে কাল পৌঁছে যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কাল থেকে তৃণমূলের কোনও সদস্য আর সংসদে যাবেন না। পরে সুদীপবাবু জানান, “মন্ত্রী জানিয়েছেন, আমাদের এই অবস্থান তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দেবেন।”
গোড়া থেকেই অধিবেশন সাময়িক ভাবে মুলতুবি করে দেওয়ার জন্য তৃণমূলের সাংসদেরা চাপ তৈরি করছিলেন। প্রতিবাদে মাস্ক পরেও রাজ্যসভায় আসেন কিছু সাংসদ। কংগ্রেস, ডিএমকে, এসপি-ও একই দাবি জানাতে শুরু করে। সূত্রের খবর, কালই লোকসভায় অর্থবিল পাশ করানোর জন্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, কালকেই সরকার পক্ষ এবং বিরোধী দলনেতাদের সঙ্গে চলতি অধিবেশনের ভবিষ্যৎ নিয়ে বৈঠকে বসবেন স্পিকার। তবে তার আগেই সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীকে দিয়ে বিরোধী দলগুলির মতামত জানার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তৃণমূল সূত্রে খবর, লোকসভার স্পিকার এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে দলের পক্ষ থেকে আজ একটি চিঠি মেল করা হয়েছে। কাল সেটি হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে। অন্য দিকে শরদ পওয়ার এনসিপি সাংসদদের টুইট করে আজ জানিয়ে দিয়েছেন দিল্লি ফেরত না যেতে। বরং বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকারি সংস্থাগুলিকে সাহায্য করুন তাঁরা।
আরও পড়ুন: হাততালি, ঘণ্টায় দেশ জুড়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, মোদীর ডাকে বিপুল সাড়া
তৃণমূলের পক্ষ থেকে আজ সংসদের স্পিকার ওম বিড়লা এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে চিঠি দিয়েছেন লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। চিঠিতে দাবি তোলা হয়েছে, আর দেরি না করে, আপাতত সংসদ মুলতুবি করে দেওয়া হোক। বলা হয়েছে, লোকসভার পর অর্থ বিল নিয়ে রাজ্যসভায় আর আলোচনা করার প্রয়োজন নেই। সেখানে বিনা আলোচনাতে পাশ করিয়ে ফের লোকসভায় পাঠানো হোক। ইতিমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছে তৃণমূল। সুদীপবাবুর কথায়, “এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে সংসদ মুলতুবি রাখা হোক।” ডেরেক ও’ব্রায়েন বললেন, “এই ধরনের জরুরি অবস্থায়, সমস্ত সাংসদের নির্বাচনী এলাকায় অবিলম্বে ফিরে যাওয়া প্রয়োজন। রাজ্যসভায় ৪৪ এবং লোকসভায় ২২ শতাংশ সাংসদের বয়স ৬৫-র উপরে। তাঁদের সংসদে আসাটাও বিপজ্জনক।”
ডেরেক-সহ বেশ কিছু সাংসদ এবং মন্ত্রীও স্বেচ্ছা কোয়রান্টিনে চলে গিয়েছেন। গত শুক্রবার লন্ডন ফেরত গায়িকা কনিকা কপুরের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পর হইচই পড়ে যায় সংসদেও। ওই ঘটনার পর সংসদ চালানো নিয়ে চাপ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে সরকারের।