ছবি: এএফপি।
কণিকা আতঙ্কে ভুগছে লখনউ থেকে দিল্লি। গায়িকা কণিকা কপূরের সঙ্গে একটি পার্টিতে হাজির ছিলেন উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জয়প্রতাপ সিংহ। পরে যোগী আদিত্যনাথ মন্ত্রিসভার বৈঠকে যান জয়প্রতাপ। তার পরে যোগী আবার দিল্লিতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। জয়প্রতাপ ও তাঁর পরিবারকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। জয়প্রতাপের করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট অবশ্য নেগেটিভ এসেছে।
প্রাক্তন সাংসদ আকবর আহমেদের পার্টিতে অন্য ভিআইপিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জয়প্রতাপ ও তাঁর স্ত্রী। গতিবিধির খোঁজ করে দেখা গিয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে জয়প্রতাপ সিংহ নয়ডা আসেন। বৈঠক করেন স্থানীয় বিধায়ক পঙ্কজ সিংহের সঙ্গে। এর পর একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন তিনি। এরই মধ্যে কণিকার সংক্রমণ ও পার্টিতে জয়প্রতাপের উপস্থিতির ভিডিয়ো সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। অন্য দিকে মন্ত্রিসভার সদস্যদের আপাতত বাড়ি থেকেই কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। রাতে আবার লখনউয়ের যে হাসপাতালে কণিকাকে রাখা হয়েছে তাদের তরফে টুইট করে জানানো হয়, গায়িকাকে এখন তারকা নয়, অন্য রোগীর মতোই হাসপাতালের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। বাতানুকূল ঘর, গ্লুটেনমুক্ত খাদ্য-সহ হাসপাতালে যে যে সুবিধে দেওয়া যেতে পারে তার সবই তাঁকে দেওয়া হয়েছে।
সব মিলিয়ে কণিকা কপূর কাণ্ড অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লির রাজনীতিকদের। শুধু কণিকাই নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উঁচু পদে থাকা ব্যক্তিরা সংক্রমণের আশঙ্কাকে যে ভাবে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিয়ম ভাঙছেন তাতে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য কর্তারা। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও টুইট করে বলেন, ‘‘এখন হল চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষের কথা শুনে চলার সময়। যাঁদের ঘরে থাকতে বলা হয়েছে তাঁদের নিয়ম মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছি। এতে আপনার সঙ্গে আপনার বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যেরাও সুরক্ষিত থাকবেন।’’ কণিকার সঙ্গে আকবর আহমেদের পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে ও তাঁর ছেলে দুষ্মন্তও। দুষ্মন্ত এর পরে দিল্লি ফিরে এসে রাষ্ট্রপতি ভবনে রামনাথ কোবিন্দের প্রাতরাশ বৈঠকে যোগ দেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। রাষ্ট্রপতি ভবন ছাড়াও সংসদের অধিবেশন ও সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দুষ্মন্ত। কণিকা-দুষ্মন্তের যোগাযোগের কারণে কাল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা সংসদে। তবে আজ বসুন্ধরা টুইট করে জানান, তিনি ও তাঁর ছেলের করোনাভাইরাস পরীক্ষা হয়েছে। ফল নেগেটিভ।
আরও পড়ুন: ‘প্রাতরাশ তৈরি করুন গৃহকর্তা’
অবহেলা করে সংক্রমণ ছড়ানোর অভিযোগে এ দিন কণিকার বিরুদ্ধে লখনউয়ের সরোজিনী নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য দফতর। উত্তরপ্রদেশের হজরতগঞ্জ ও গোমতীনগর থানা এলাকায় দু’টি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ায় আলাদা করে আরও দু’টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে ওই গায়িকার বিরুদ্ধে। বিহারেও ওই গায়িকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন এক আইনজীবী। লখনউয়ের তাজমহল হোটেলে ১৩-১৫ মার্চের মধ্যে একাধিক পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন কণিকা। আজ ওই হোটেল সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।