প্রতীকী ছবি।
করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রন ক্রমশ ছড়াচ্ছে গোটা দেশেই। দাবি উঠেছে বুস্টার ডোজ়ের। কিন্তু বুস্টার ডোজ়ে আদৌ কোনও লাভ হবে কি, প্রশ্ন তুললেন পুদুচেরির জওহরলাল ইনস্টিটিউট অব পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (জেআইপিএমইআর) সংস্থার ডিরেক্টর রাকেশ আগরওয়াল। কেন্দ্র ফের আজ জানিয়েছে, আপাতত বুস্টার নয়, দেশের সব মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ়ের আওতায় নিয়ে আসাই প্রধান লক্ষ্য সরকারের।
ওমিক্রন প্রজাতি ইতিমধ্যেই ৬৫টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ওমিক্রন সংক্রমণের জেরে ব্রিটেন সরকার সে দেশে নতুন করে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। ভারতেও বাংলা-সহ একাধিক রাজ্য থেকে ওমিক্রন আক্রান্তের তথ্য আসতে শুরু করেছে। কেবল দিল্লিতেই গত কাল চার জন রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যা দেখে নতুন করে লকডাউনের কথা ভাবছে অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার। ওমিক্রন রুখতে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে প্রতিষেধকের বুস্টার ডোজ় দেওয়ার। বিশেষ করে যারা স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার, তাঁদের বুস্টার ডোজ় দেওয়ার দাবি তুলেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন।
কিন্তু বুস্টার ডোজ়ের আদৌ প্রয়োজন রয়েছে কি না, আজ সেই প্রশ্ন তুলে দিলেন জেআইপিএমইআর সংস্থার প্রধান রাকেশ আগরওয়াল। তাঁর যুক্তি, ‘‘বুস্টার যাঁদের দেওয়া হবে তাঁদের মধ্যে বড় অংশ ইতিমধ্যেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শিকার হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে তাঁরা প্রতিষেধক নিয়েছেন। ফলে তাঁদের শরীরে বুস্টার ডোজ় সেই অর্থে কার্যকরী প্রভাব ফেলবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’ ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, করোনার প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার পরে অন্তত নয় মাস শরীরে প্রতিরোধক্ষমতা থাকে। যেহেতু ওমিক্রনে মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তাই যাঁদের শরীরে প্রতিষেধকের ফলে উৎপন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে ওই নতুন প্রজাতি বিশেষ প্রভাব ফেলতে সক্ষম হচ্ছে না। রাকেশের কথায়, ‘‘ওমিক্রন খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়ালেও এখনও পর্যন্ত ওই প্রজাতির আক্রমণে কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন বলে সামনে আসেনি। তবু সতর্ক থাকতে হবে। কোভিডবিধি মেনে চলতে হবে।’’
ওমিক্রনকে ঠেকাতে দেশের সমস্ত পূর্ণবয়স্ক মানুষকে যত দ্রুত সম্ভব দু’টি ডোজ়ের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়ালের কথায়, ‘‘যত বেশি সংখ্যক মানুষ দ্রুত দ্বিতীয় ডোজ় নেবেন, তত সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কমবে। সরকারের প্রধান লক্ষ্য হল দেশের মানুষকে দ্রুত দ্বিতীয় ডোজ়ের আওতায় নিয়ে আসা।’’
বর্ষশেষে কড়াকড়ি: কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ এ বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জারি থাকবে বলে বুধবার গ্রেটার মুম্বই পুলিশ কমিশনার নির্দেশিকায় জানিয়েছেন। সম্পূর্ণ টিকাকরণ যাঁদের হয়েছে, শুধু তাঁরাই কোনও কর্মসূচি করতে বা তাতে যোগ দিতে পারেন। গণপরিবহণ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও পুরো টিকাকরণ দরকার। ঘেরা এবং খোলা জায়গায় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের সংখ্যা যথাক্রমে অর্ধেক ও সিকি ভাগ রাখতে বলা হয়েছে।