Coronavirus in India

২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত প্রায় ৫৫ হাজার, সুস্থতার হার ৬৫.৪৪ শতাংশ

দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে আমেরিকার ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে ভারত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২০ ১১:৩৬
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ফের দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেল। গত কয়েক দিন ধরেই সংখ্যাটা ৫০ হাজারের কোটায় ঘোরাফেরা করছিল। শুক্রবার দেশে ৫৫ হাজার মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন। শনিবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ হাজার। তার চেয়ে খানিকটা কম হলেও, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ হাজারের বেশি মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকায় প্রায় ৫৯ হাজার মানুষ নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ব্রাজিলে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ। তাই বলা যায়, দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে আমেরিকার ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে ভারত।

Advertisement

রবিবার সকালে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৩৫ জন। তাতে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এসে ঠেকেছে ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার ৭২৩-এ। গোটা বিশ্বে সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে শীর্ষে রয়েছে আমেরিকা। সেখানে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬ লক্ষ ২০ হাজার ৪৪৪। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ লক্ষ ৭ হাজার ৮৭৭ জন। সেই তালিকায় ভারত রয়েছে তৃতীয় স্থানে।

প্রতি দিন যত সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে, এবং তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। শুক্রবার তা বেশ খানিকটা কমে নয় শতাংশের কম হয়েছিল। শনিবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০.৮৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার বেড়ে ১১.৮২ শতাংশ হয়েছে। তবে শুক্রবার যেখানে ৬ লক্ষ ৪২ হাজার জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। শনিবার তা কমে দাঁড়ায় ৫ লক্ষ ২৫ হাজারে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংখ্যাটা আরও কমে ৪ লক্ষ ৬৩ হাজার ১৭২-এ এসে ঠেকেছে।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আরও পড়ুন: অগস্টে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ‘রেকর্ড’ সংখ্যা দিয়েই যাত্রা শুরু সংক্রমণের

তবে এত কিছুর মধ্যেও সুস্থতার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় খানিকটা স্বস্তিতে ভারত। দেশে এখনও পর্যন্ত ১১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬২৯ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৬৫.৪৪ শতাংশই সেরে উঠেছেন চিকিৎসায়। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ হাজার ২৫৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

গোটা বিশ্বে মৃত্যুর নিরিখে আমেরিকা (১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৪৪৭), ব্রাজিল (৯৩ হাজার ৫৬৩), মেক্সিকো (৪৭ হাজার ৪৭২) এবং ব্রিটেন (৪৬ হাজার ২৭৮)-এর পরেই পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। দেশে এখনও পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৩৬৪ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৫৩ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।

মৃত্যুর নিরিখে এই মুহূর্তে দেশে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে এখনও পর্যন্ত ১৪ হাজার ৯৯৪ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। দিল্লিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজার ৯৬৩ জন করোনা রোগী। তামিলনাড়ুতে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৩৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গুজরাত, পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্ধ্রপ্রদেশে এখনও পর্যন্ত যথাক্রমে ২ হাজার ৪৪১, ১ হাজার ৫৮১ এবং ১ হাজার ৩৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মৃতের সংখ্যা এখনও হাজার পেরোয়নি মধ্যপ্রদেশ (৮৬৭), রাজস্থান (৬৭৪), তেলঙ্গানা (৫১৯), হরিয়ানা (৪২১), পঞ্জাব (৩৮৬), জম্মু ও কাশ্মীর (৩৭৭), বিহার (২৯৬), ওড়িশা (১৭৭) এবং ঝাড়খণ্ডে (১০৬)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।

আরও পড়ুন: বচসা থামাতে গিয়ে ময়দানে মদ্যপদের হাতে খুন সিভিক ভলান্টিয়ার, আটক তিন​

সংক্রমণের নিরিখেও দেশের মধ্যে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৭১৯ জন নোভেল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ২ লক্ষ ৫১ হাজার ৭৩৮। ১ লক্ষ ৫০ হাজার ২০৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন অন্ধ্র্রপ্রদেশে। দিল্লিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭১৬। কর্নাটকে এখনও পর্যন্ত নোভেল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ২৯ হাজার ২৮৭ জন। উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা, গুজরাত এবং বিহারে মোট আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৮৯ হাজার ৪৮, ৭২ হাজার ৭৭৭, ৬৪ হাজার ৭৮৬, ৬২ হাজার ৪৬৩ এবং ৫৪ হাজার ২৪০।

দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর নিরিখে অগস্টের প্রথম দিনই রেকর্ড গড়েছে পশ্চিমবঙ্গ। শনিবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে যে বুলেটিন প্রকাশ করা হয়, তাতে এক দিনে ২ হাজার ৫৮৯ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়। একই দিনে ৪৮ জন করোনা পজিটিভ রোগীর নাম মৃতের তালিকায় নথিভুক্ত হয়েছে।

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement