ফাইল চিত্র।
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তিন বার ভোলবদল।
রাজ্যে রাজ্যে কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের অভাব দেখা দিতে গত কাল সকালে কেন্দ্রে জানিয়েছিল, দেশে যথেষ্ট অক্সিজেন রয়েছে। সন্ধ্যায় আবার সরকারই বিবৃতি দিয়ে বলেছিল, ৫০ হাজার টন অক্সিজেন বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কোভিড পরিস্থিতিতে দেশে অক্সিজেনের অভাব নিয়ে বৈঠকে বসলেন।
কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে কেন্দ্রের নাজেহাল দশা দেখে আজ বিরোধীদের প্রশ্ন, সরকারের পরিকাঠামো আদৌ তৈরি তো? বিরোধীদের আশঙ্কা, হাসপাতালে আইসিইউ বেড থেকে অক্সিজেন, টিকা থেকে কোভিড পরীক্ষার পরিকাঠামো— যে ভাবে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, তাতে কী ভাবে পরিস্থিতি সামলানো হবে! তাদের প্রশ্ন, এই পরিস্থিতিতে অতিমারি না-সামলে মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কেন পশ্চিমবঙ্গে ভোট প্রচারে ব্যস্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন বিরোধীদের।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্র, গুজরাত-সহ যে ১২টি রাজ্যে কোভিডের দাপট সবচেয়ে বেশি, সেখানে আগামী ১৫ দিনে কতটা অক্সিজেন প্রয়োজন পড়বে এবং কতটা জোগান দেওয়া যাবে, আজকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তা খতিয়ে দেখেছেন। প্রতিটি জেলার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০, ২৫ ও ৩০ এপ্রিল এই রাজ্যগুলিতে কত পরিমাণ মেডিক্যাল অক্সিজেন প্রয়োজন পড়বে, তা আঁচ করে ইতিমধ্যেই অক্সিজেন বরাদ্দ করা হয়েছে। ইস্পাত কারখানাগুলিতে তৈরি বাড়তি অক্সিজেনও সরবরাহ করা হবে। অক্সিজেনের অভাব মেটাতে অক্সিজেন আমদানি নিয়েও আলোচনা হয়।
বিরোধীদের প্রশ্ন— সরকার নিজেই বলছে, দেশে দৈনিক ৭,২৮৭ টন অক্সিজেন উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। এখন অক্সিজেন প্রয়োজন পড়ছে তার ৫৪ শতাংশ। তা হলে অক্সিজেন আমদানির প্রয়োজন কাদের স্বার্থে?
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, মহারাষ্ট্রে এখন উৎপাদনের তুলনায় অক্সিজেনের চাহিদা বেশি। মধ্যপ্রদেশে কোনও অক্সিজেন উৎপাদন ক্ষমতা নেই। গুজরাত, কর্নাটক, রাজস্থানেও চাহিদা বাড়ছে। রাজ্য স্তরে চাহিদা ও জোগানের এই সমস্যা মেটাতেই অক্সিজেন আমদানি করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রককে প্রত্যন্ত এলাকার ১০০টি হাসপাতালকে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। যেখানে পিএম-কেয়ার্সের টাকায় নিজস্ব অক্সিজেন উৎপাদন ব্যবস্থা হবে। বিরোধীদের প্রশ্ন, এক বছর আগে এই কাজ করা হয়নি কেন?
আজ কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর অভিযোগ, এক বছর আগে লকডাউন জারি করার পরে সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে হাসপাতাল, ভেন্টিলেটর, পরীক্ষাগারের মতো পরিকাঠামো তৈরি করা উচিত ছিল। তাঁর বক্তব্য, “এক বছর পরেও মানুষ ভুগে চলেছেন। পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী নিজের দায় এড়িয়ে চলেছেন।”
শনিবারও পশ্চিমবঙ্গে প্রচার করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরির দাবি, “বড়, অনিয়ন্ত্রিত জমায়েত এখনই নিষিদ্ধ হোক। সকলের জন্য প্রতিষেধকের গতি বাড়িয়ে, পিএম-কেয়ার্সের টাকা মানুষের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় খরচ হোক।”