ছবি: পিটিআই।
“ইয়েস, ইয়েস, আমরা নিশ্চয়ই আর্থিক বৃদ্ধি ফিরে পাব”— রীতিমতো টেবিল ঠুকে আজ শিল্পপতিদের ভরসা জোগালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আর্থিক বৃদ্ধি কমে যাওয়ার দায় পুরোটাই করোনা-সঙ্কটের উপরে চাপিয়ে দিয়ে তাঁর যুক্তি, “করোনাভাইরাস আমাদের অর্থনীতির গতি কমিয়ে দিয়েছে।”
বণিকসভা সিআইআই-এর ১২৫তম বার্ষিক সম্মেলনে আজ প্রধানমন্ত্রীর এই দাবি শুনে শিল্পমহলের অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আর্থিক বৃদ্ধির হার করোনা-সঙ্কটের অনেক আগে থেকেই কমতে শুরু করেছিল। লকডাউন শুরুর আগেই জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ৩.১%-এ নেমে এসেছে। সোমবার আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ ভারতের রেটিং কমিয়ে দিয়ে একই সুরে জানিয়েছে, করোনা-সঙ্কটের আগে থেকেই ভারতের অর্থনীতিতে ঝিমুনি চলছিল। ২০১৭-র পর থেকেই মোদী সরকার প্রত্যাশামতো সংস্কার করতে পারেনি।
আজ প্রধানমন্ত্রী শিল্পপতিদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, “আমাদের কাছে সংস্কার কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভবিষ্যতের দিকে চোখ রেখে সুপরিকল্পিত। আমাদের কাছে সংস্কার মানে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস ও তার রূপায়ণ।” কৃষি থেকে কয়লা ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বিভিন্ন সিদ্ধান্তের তালিকা দিয়ে তিনি বলেন, “আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনারা এক পা এগোন, আমি চার কদম এগিয়ে যাব। ভারত এখন লকডাউনকে পিছনে ফেলে আনলক-এর প্রথম দফায় ঢুকে পড়েছে। তাই সে দিক থেকে আমরা বৃদ্ধি ফিরে পেতে শুরু করেছি।” যদিও রাহুল গাঁধীর বক্তব্য, “মুডি’জ মোদীর অর্থনীতির পরিচালনাকে সব থেকে খারাপ রেটিংয়ের স্রেফ এক ধাপ উপরে রেখেছে। গরিব, ছোট-মাঝারি শিল্পকে সাহায্য না-করার অর্থ, আরও খারাপ সময় আসতে চলেছে।”
আরও পড়ুন: মোদী-সমর্থক ৬৫%, দাবি সমীক্ষায়
আরও পড়ুন: ২৫০ কোটির ব্যবসাও এখন মাঝারি শিল্প হল
সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসাকে মাঝারি শিল্পের আওতায় এনেছে। বুধবার বেলা ১১টায় ফের মন্ত্রিসভার বৈঠক। অত্যাবশ্যক পণ্য আইন সংশোধন, প্রকল্প উন্নয়ন বিভাগ তৈরির মতো আর্থিক প্যাকেজের আরও কিছু সিদ্ধান্তে সিলমোহর বসবে। মোদী বলেন, “অর্থনীতি মজবুত করা আমাদের অগ্রাধিকার।”
বণিকসভার এক কর্তা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আজ আর্থিক বৃদ্ধি কমার কথা স্বীকার করলেও সে জন্য করোনা-কে দায়ী করেছেন। কিন্তু, করোনা-সঙ্কটের অনেক আগেই ২০১৯-এর জুলাই থেকে ২০২০-র মার্চ পর্যন্ত টানা নয় মাস কারখানার উৎপাদন কমেছে। তা সত্ত্বেও সরকার দাবি করে গিয়েছে, আর্থিক বৃদ্ধির হার ৮.৫% ছোঁবে। বাস্তবে ২০১৯-২০-তে বৃদ্ধির হার ৪.২%-এ নেমে এসেছে। কর্পোরেট কর কমিয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টায় লাভ হয়নি।”