ছবি: সংগৃহীত।
দেশ জুড়ে করোনার সংক্রমণ দাবানলের মতো ছড়িয়েছে। সংক্রমণ রুখতে সরকারি নির্দেশিকার যথাযথ প্রয়োগের অভাবেই এমনটা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের আরও সতর্কতা এবং নজরদারির প্রয়োজন। শুক্রবার এমনটাই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের মতে, “করোনাভাইরাসের জেরে বিশ্বের প্রত্যেকেই কোনও না কোনও ভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন। কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে আসলে বিশ্বযুদ্ধ চলছে।”
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি আর সুভাষ রেড্ডি এবং বিচারপতি এম আর শাহের তিন সদস্যের বেঞ্চের মতে, দেশ জুড়ে কোভিড টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো উচিত। পাশাপাশি, করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারিতে থেকে লড়াই করা চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে মধ্যে বিশ্রাম দেওয়া উচিত বলেও মনে করে বেঞ্চ।
করোনার মোকাবিলায় কার্ফু বা লকডাউনের ঘোষণা করা হলে তা যাতে আগেভাগেই করা হয়, সে দিকেও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন শীর্ষ আদালতের ওই তিন বিচারপতি। তাঁদের মতে কার্ফু বা লকডাউনের ফলে কারও জীবন বা জীবিকার উপর যাতে প্রভাব না পড়ে, তা সরকারের দেখা উচিত। সেই সঙ্গে সরকারি নির্দেশিকা অগ্রাহ্যকারীদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করা উচিত বলেও মনে করে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন: দৈনিক সুস্থতার হার বাড়লেও রাজ্যে ফের ২ হাজারের বেশি করোনায় আক্রান্ত
আরও পড়ুন: কোভিড টিকা কোথায়, কী ভাবে, পদ্ধতি জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক
বেঞ্চ মনে করে, সংক্রমণ রুখতে বাস বা রেল স্টেশন, দোকান-বাজার, ফুড কোর্টে পুলিশকর্মীর নজরদারি বাড়ানো উচিত। কারণ, এ সমস্ত জায়গার ভিড়ভাট্টা থেকেই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি।
করোনার মোকাবিলার ক্ষেত্রে বরাবরই সঠিক তথ্য এবং পরিসংখ্যান গোপন করার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। এই প্রবণতা বিপজ্জনক বলে মনে করেন চিকিৎসার পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত একাংশ। এ বিষয়ে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, “কোভিড টেস্টের তথ্য এবং পরিসংখ্যান নিয়ে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। না হলে সকলকে ভুল পথে পরিচালনা করা হবে এবং জনমানসে এই ধারণাই ছড়াবে যে পরিস্থিতি অনুকূল রয়েছে। ফলে সংক্রমণের বিষয়ে সুরক্ষা গ্রহণে ঢিলেঢালা মনোভাব জন্মাবে।”
সংক্রমণের রুখতে সাধারণের পাশাপাশি করোনা-যোদ্ধাদের স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া জরুরি বলে মনে করে শীর্ষ আদালত। আদালতের মতে, “করোনার বিরুদ্ধে ক্রমাগত লড়াই করা স্বাস্থ্যকর্মী-আধিকারিকদের ক্লান্তির বিষয়টি নিয়েও ভাবা উচিত। গত আট মাস ধরেই তাঁরা নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। ফলে তাঁদের মানসিক এবং শারীরিক ক্লান্তি আসাটা স্বাভাবিক। মাঝে মধ্যে তাঁদের বিশ্রাম দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।”