ছবি: পিটিআই।
ঠেকে শেখা একেই বলে! করোনাভাইরাস গোটা দেশকে অচল করে রাখার পরে এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষব্যক্তিরা বুঝতে পারছেন, স্বাস্থ্যখাতে খরচ বাড়ানো ছাড়া আর উপায় নেই। রাজ্যগুলিকেই প্রথম সারিতে থেকে করোনার মতো অতিমারির মোকাবিলা করতে হবে। তার জন্য রাজ্যের হাতে আরও বেশি পরিমাণে টাকা তুলে দিতে হবে। সেই অর্থ যেখানে যেমন প্রয়োজন, তেমন খরচ করার খোলা ছুটও দিতে হবে।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিংহের মতে, দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কেমন হওয়া দরকার, করোনা-সঙ্কট তা নিয়ে ভাবনাচিন্তাই বদলে দিয়েছে। অর্থ কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ঠিক হবে, আগামী অর্থ বছর বা ২০২১-২২ থেকে কেন্দ্র তার আয়ের কতখানি রাজ্যগুলির মধ্যে ভাগ করে দেবে এবং কেন্দ্র কোন খাতে রাজ্যগুলিকে বিশেষ অনুদান দেবে। অক্টোবরে কমিশনের রিপোর্ট জমা পড়ার কথা। কমিশন সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি নিয়ে বিশেষ সুপারিশ থাকবে।
এ দেশে কি সরকার স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা পরিকাঠামোয় কম খরচ করে? স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীন ‘সেন্ট্রাল ব্যুরো অব হেলথ ইন্টেলিজেন্স’-এর রিপোর্ট ‘ন্যাশনাল হেলথ প্রোফাইল-২০১৯’ অনুযায়ী, কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে এ দেশে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপি-র মাত্র ১.২৮% অর্থ খরচ হয়। কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির চলতি বছরের বাজেট অনুযায়ী, তা সামান্য বেড়ে ১.২৯% হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে আমেরিকায় সে দেশের সরকার জিডিপি-র প্রায় ১৪% খরচ করে। জাপান, জার্মানির মতো দেশ খরচ করে ৯%-র বেশি। ব্রিকস-গোষ্ঠীভুক্ত ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকাও অনেক এগিয়ে। এমনকি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তাইল্যান্ড বা শ্রীলঙ্কা সরকারও স্বাস্থ্যখাতে ভারতের থেকে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করে।
আরও পড়ুন: বেশি দামেও পরোয়া নেই মদ্যপায়ীদের
আরও পড়ুন: পরীক্ষায় কুষ্ঠের ওষুধ, মোদী চান ‘হ্যাকাথন’
এত দিন মোদী সরকারের লক্ষ্য ছিল, ২০২৫-এ স্বাস্থ্যখাতে খরচ জিডিপি-র ২.৫%-এ নিয়ে যাওয়া। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রকও বুঝছে, সেটাও বেশ কম। কারণ ওই বছর বিশ্বের দেশগুলি গড়ে জিডিপি-র প্রায় ৬% স্বাস্থ্যখাতে খরচ করবে। কমিশন সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব প্রীতি সুদন অর্থ কমিশনকে জানান, প্রাথমিক স্বাস্থ্যখাতে রাজ্যগুলির অর্থের অভাব রয়েছে। তার জন্য বিনা শর্তে অর্থ জোগাতে হবে।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এ বছর বাজেটের মাত্র ২.৩% স্বাস্থ্যে খরচ করেন। গত বছরের বাজেটের তুলনায় কম। করোনা-সঙ্কট ও লকডাউনের ফলে সরকারের আয় কমছে। এই অবস্থায় কি স্বাস্থ্যখাতে খরচ বাড়ানো সম্ভব হবে? অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “এটা অগ্রাধিকারের প্রশ্ন। করোনা যে ভাবে জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠছে, তা মাথায় রেখে অর্থ কমিশন যদি রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় অর্থ ঢালতে বলে, কেন্দ্রকে তা হলে সেটাই মেনে নিতে হবে।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)