গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেশ জুড়ে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল সাড়ে ৪৭ লক্ষের কোঠা। সেই সঙ্গে, করোনাকালে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রোগীও সেরে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। তবে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় কোনও হেরফের নেই। গত কয়েক দিনের মতোই তা ছাড়িয়েছে দৈনিক ৯০ হাজারের গণ্ডি। সেই সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও পার করেছে হাজারের ঘর।
করোনা-আক্রান্তের তালিকায় রবিবারও শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। তার পরেই রয়েছে দক্ষিণের তিন রাজ্য— অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং কর্নাটক। এ দিন সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গোটা দেশে করোনা-আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৪৭ লক্ষ ৫৪ হাজার ৩৫৬। তবে এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৭ লক্ষ ২ হাজার ৫৯৫ জন। যার ফলে এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৯ লক্ষ ৭৩ হাজার ১৭৫। সুস্থতার হারের নিরিখে যা ৭৭.৮৮ শতাংশ। যা করোনাকালে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি। শনিবার তা ছিল ৭৭.৭৭ শতাংশ।
সুস্থতার হার বাড়লেও গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের গতি অব্যাহত থেকেছে দিন কয়েকের মতোই। এ দিনের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে দেখা গিয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে দেশে কোভিড পজিটিভ হয়েছেন ৯৪ হাজার ৩৭২ জন। যা শনিবারের থেকে সামান্য কম। গত কাল দেশ জুড়ে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৭ হাজার ৫৭০।
আরও পড়ুন: নিট পরীক্ষার্থীদের জন্য ছুটল মেট্রো, সোমবার সুযোগ সকলকেই
সুস্থতার হারের পাশাপাশি সংক্রমণের নিম্নগতিও স্বস্তি দিচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তাদের। প্রতি দিন যত জনের কোভিড টেস্ট করানো হয় এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যকের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী তা হল ৮.৮১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ফের এমসে অমিত শাহ, এ বার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকা বা ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যাটা যেখানে যথাক্রমে ৩৯ হাজার ৮৩৭ এবং ৫৩ হাজার ৩৭৭, সেখানে এ দেশে তা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৯৭ হাজারের বেশি। এর মধ্যে শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রেই সন্ধান মিলেছে ২২ হাজার ৮৪ জন নতুন রোগীর। ওই রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষেরও বেশি। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী, তা হল ১০ লক্ষ ৩৭ হাজার ৭৬৫।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি কোভিড রোগীর সন্ধান মিলেছে অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, তামিলনাড়ু এবং উত্তরপ্রদেশে। ওই রাজ্যগুলিতে এই মুহূর্তে মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৯৫ হাজার ৭৩৩, ৯৭ হাজার ৮৩৪, ৪৭ হাজার ১১০ এবং ৬৭ হাজার ৯৫৫।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
চলতি মাসের গোড়া থেকে কোভিডে মৃত্যুর দৈনিক সংখ্যা হাজারের ঘর পার করছিল। এ দিনের বুলেটিনেও দেখা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশ জুড়ে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১১৪ জনের। এর ফলে এ দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার ৫৮৬।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
দেশে করোনা-আক্রান্তের তালিকায় নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজধানী দিল্লি। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৪ হাজার ৩২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যার ফলে দিল্লিতে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৮ হাজারেরও বেশি। পশ্চিমবঙ্গে করোনা রোগীর সংখ্যাও প্রায় ২ লক্ষের কাছাকাছি। এ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৪৯৩। সেই সঙ্গে এ রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৭ জনের।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)