গুজরাতের আমদাবাদ থেকে ওড়িশা ফেরার জন্য বিশেষ ট্রেনে উঠছেন শ্রমিকরা। শনিবার। ছবি: পিটিআই
ওড়িশায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এত দিন পর্যন্ত তেমন ছড়ায়নি। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফিরতেই লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে আক্রান্তের সংখ্যা। ২৪ ঘণ্টা আগেও রাজ্যে যেখানে করোনা আক্রান্ত ছিলেন ২৯৪ জন, রবিবার এক লাফে তা বেড়ে হয়ে গেল ৩৫২। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে যে ৫৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। নবীন পট্টনায়ক প্রশাসনের দেওয়া এই তথ্যে ভিন রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
ওড়িশার মধ্যে করোনার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছিল গঞ্জাম জেলায়। আজ রবিবার ওড়িশা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এই জেলায় নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে ২৯ জনের। তাঁরা সবাই গুজরাতের সুরত থেকে ফিরেছেন। এই নিয়ে ওই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১১৮।
ওড়িশার এই সংখ্যাবৃদ্ধিতে যোগ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নামও। বাংলা-বিহার সীমানার বালেশ্বর জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ জন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনই পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফিরেছেন। বাকি পাঁচ জন ফিরেছেন কর্নাটক থেকে। বালেশ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত এয়ার ইন্ডিয়ার ৫ বিমানচালক-সহ ৭
অনুগুল জেলা ছিল গ্রিন জোনের তালিকায়। অর্থাৎ সেখানে কোনও করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। কিন্তু এক দিনেই সেখানে কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ১৩ জনের। তার মধ্যে ১১ জনই সুরত থেকে ফিরেছেন। কিন্তু অনুগুল জেলা প্রশাসনের উদ্বেগ বেড়েছে আরও একটি কারণে। এক জন এমন ব্যক্তি সংক্রমিত হয়েছেন, যাঁর ভিন রাজ্য বা বিদেশযাত্রার ইতিহাস নেই। লকডাউনের মধ্যেও তিনি কী ভাবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলেন, তাই নিয়েই ঘুম উড়েছে নবীন পট্টনায়েক প্রশাসনের।
সব মিলিয়ে ওড়িশায় যে ৫৮ জন নতুন আক্রান্ত হয়েছেন, তার মধ্যে ৪১ জনই ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন। আর এই নিয়ে রাজ্যের ৩০টির মধ্যে ২০টি জেলাতেই সংক্রমণ ধরা পড়ল। একমাত্র আক্রান্ত ধরা পড়েছে ময়ুরভঞ্জ জেলাতেও।
ভিন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেদের রাজ্যে ফিরলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে— এমন আশঙ্কা করছে অনেক রাজ্য প্রশাসনই। ওড়িশার এই পরিসংখ্যানে দুশ্চিন্তা আরও বাড়ছে। তার মধ্যে আবার আরও দু’টি ট্রেনের একটি সুরত এবং একটি চেন্নাই থেকে রওনা দিয়েছে ওড়িশার উদ্দেশে। দু’টি ট্রেনই গঞ্জাম জেলার জগন্নাথপুরে পৌঁছবে। ফলে নবীন পট্টনায়ক প্রশাসনের উদ্বেগ আরও বাড়ছে ওই দু’টি ট্রেনের যাত্রীদের নিয়েও।
আরও পড়ুন: এমআর বাঙুরে করোনায় মৃত্যু আলিপুর আদালতের আইনজীবীর
তবে ওড়িশা সরকারের মুখপাত্র সুব্রত বাগচি রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ যাঁরা শনাক্ত হয়েছেন, তাঁদের সবাই কোয়রান্টিন সেন্টারে রয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, সরকারি নিয়ম মেনে ভিন রাজ্য থেকে প্রত্যেককেই কোয়রান্টিন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানেই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে। ২১ দিন ওই কোয়রান্টিন সেন্টারেই থাকতে হবে তাঁদের। তার পর বাড়ি ফিরে আরও এক সপ্তাহ হোম আইসোলেশনে থাকতে হবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)