ছবি: পিটিআই।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভারতে চরম পর্যায়ে পৌঁছতে পারে জুন মাসের শেষ দিকে। জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে দেশ জুড়ে অত্যন্ত ধীর গতিতে কমতে শুরু করতে পারে এই সংক্রমণ। সংক্রমণ একেবারে কমের দিকে পৌঁছবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণ ন’ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক-সহ দেশের আরও তিন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গবেষকের করা সমীক্ষায় এই দাবি করা হয়েছে।
এপ্রিলের প্রথম দিকে কেন্দ্রীয় সরকারের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ বোর্ড (সার্ব) দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছে ভারতের পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড-১৯ মডেল তৈরির প্রস্তাব দেয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের আরও ১১টি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এই সমীক্ষার সুযোগ পায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর ম্যাথমেটিক্যাল বায়োলজি অ্যান্ড ইকোলজি’র কো-অর্ডিনেটর এবং গণিত বিভাগের শিক্ষক নন্দদুলাল বৈরাগী এই প্রজেক্টের মূল ইনভেস্টিগেটর।
নন্দদুলালবাবু জানালেন, কত দিন পর্যন্ত এই অতিমারি চলবে, সংক্রমণের সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, কী ভাবে সংক্রমণ বাড়বে, মৃত্যু কত ঘটবে ইত্যাদি সমীক্ষা করে তাঁদের অভিমত, জুনের শেষ সপ্তাহে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা সব থেকে বেশি। সেই সময় দিনে সাত হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার জন সংক্রমিত হতে পারেন। জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সংক্রমণের হার খুব ধীরগতিতে নিম্নমুখী হবে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তা একেবারে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন: সম্পত্তি ও জলকর রাজ্যকে বাড়াতে হবে, শর্ত কেন্দ্রের
আরও পড়ুন: শ্রমিক স্পেশালের জন্য বান্দ্রায় শ্রমিকদের ভিড়
ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে দেশ জুড়ে পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ন’হাজারের মতো। সমীক্ষায় দিল্লি, গুজরাত, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রের সংক্রমণের বিষয়টিও দেখা হয়েছে। এই সমীক্ষায় নন্দদুলালবাবুর সঙ্গে রয়েছেন, যাদবপুরের এই সেন্টারেরই গবেষক অভিজিৎ মজুমদার, আগরতলার মহারাজা বীর বিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবদত্ত আদক, ফরিদাবাদ ট্রানস্লেশনাল হেল্থ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের সম্রাট চট্টোপাধ্যায় এবং অভিজিৎ পাল। কুসুম দেবী সুন্দর লাল দুগার জৈন ডেন্টাল কলেজের তাপসকুমার বালা। ইতিমধ্যেই এই সমীক্ষার অন্তর্বর্তী রিপোর্ট সার্বকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে আরও বিস্তারিত পাঠানো হবে।
নন্দদুলালবাবু বলেন, ‘‘এই সংক্রমণ চেষ্টা করলেও আটকানো যাবে না। যেমন, পরিযায়ী শ্রমিকেরা আসছেন। তাঁদের থেকে কিছু সংক্রমণের আশঙ্কা থাকবেই।’’ এই সমীক্ষায় সংক্রমণের সময়ে গণপরিবহণ কঠোর ভাবে বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, অনেক দিন ধরে যে এই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে তা মানুষকে বোঝাতে হবে।