প্রতীকী ছবি।
আগামী দু’মাসের মধ্যে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই করোনা টিকা কোভ্যাক্সিন-কে ছাড়পত্র দেবে। কয়েক সপ্তাহ কিছুটা নিঃশব্দে লাগাতার দৌত্য চালিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে এই দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র।
ভারত বায়োটেক-এর সঙ্গে আগাগোড়া যোগাযোগ রেখে এ ব্যাপারে তাদের সব রকম সহায়তা করা হচ্ছে বলেই জানানো হচ্ছে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। ফলস্বরূপ ইউরোপের ১৫টির-ও বেশি দেশের ছাড়পত্র পাওয়া গিয়েছে। মন্ত্রক সূত্রে জানানো হচ্ছে, চিনের মতো নিজেদের টিকা নিয়ে চড়া স্বরের কূটনীতি গোড়া থেকেই করতে চায়নি সাউথ ব্লক। বরং কিছুটা গোপনেই ভারত বায়োটেক-কে প্রতিপদে পরামর্শ দিয়ে যাওয়া হয়েছে ভূকৌশল এবং অর্থনীতির জটিল আদানপ্রদান সম্পর্কে। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের রাজধানী এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রতিষেধক সংক্রান্ত তথ্য (ডাটা) সরবরাহ করা হয়েছে নিয়মিত ভাবে।
সূত্রের খবর ভারত বায়োটেকের পক্ষ থেকে ৫০টিরও বেশি রাষ্ট্রে টিকা অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সূত্রের মতে, ভারত বায়োটেক এখন ১৫টিরও বেশি দেশের ছাড়পত্র পেয়েছে। আশা করা হচ্ছে, বাদবাকি দেশগুলির কাছ থেকেও ছাড়পত্র আসবে অগস্ট মাসের মধ্যে। ভারত বায়োটেক সূত্রের বক্তব্য, কোভ্যাক্সিনের বিষয়ে অতিরিক্ত তথ্য হু-এর কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। কোভ্যাক্সিন জুলাইয়ের মধ্যেই হু-এর তালিকায় আসবে বলে আশা।
কোভিড-কালে ভারত থেকে বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে নানা বাধা। প্রতিষেধক নিয়েও তৈরি হয়েছে সমস্যা। ভারতে অনুমোদিত কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ড টিকা নিলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল না। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘এই ভয়ানক অতিমারির কোনও কোনও দেশের একতরফা ভাবে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করার বিষয়টি অত্যন্ত অনৈতিক। দু’টি দেশ নিজেদের মধ্যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধিনিষেধ নিয়ে আলোচনা করুক এবং দ্রুত মতৈক্যের জায়গায় আসুক, এটাই কাম্য। অতিমারির গোড়ার দিকে ভারতের তৈরি বেশ কিছু ওষুধ বিশ্বের বহু দেশ নিয়েছে। এখন অন্যান্য
দেশের পক্ষ থেকেও সহানুভুতিশীল আচরণ কাম্য।’’
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিড পরিস্থিতির এখন অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। অফিস, বিশ্ববিদ্যালয় ও পর্যটন কেন্দ্রগুলিও খুলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে আগামী দিনে অনেক
ভারতীয়ই পড়াশোনা বা কাজের সূত্রে বিদেশে যাবেন। তার উপর বেশির ভাগ ভারতীয় কোভিশিল্ড বা
কোভ্যাক্সিন এর টিকা নিচ্ছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে দুই করোনা টিকা কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন–কে ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর ধারাবাহিক চাপ বাড়িয়েছিল ভারত। ভারতের তরফে জানানো হয়েছিল, এই দুই টিকা গ্রহীতাদের ‘গ্রিন পাস’ না দিলে ইউরোপের দেশগুলি থেকে আগত ব্যক্তিদেরও বাধ্যতামূলক কোয়রান্টিনে থাকতে হবে। এর পরই জার্মানি, স্লোভেনিয়া, অস্ট্রিয়া, গ্রিস, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, সুইৎজারল্যান্ড ও এস্টোনিয়া কোভিশিল্ড টিকা গ্রহীতাদের ‘গ্রিন পাস’দিতে রাজি হয়। আন্তর্জাতিক দরজা খুলতে শুরু করে কোভ্যাক্সিনেরও।