প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণ রুখতে রবিবার থেকে কার্যত লকডাউন চলছে গোটা রাজ্যে। আগামী ৩০ মে পর্যন্ত লঞ্চ, বাস, মেট্রোর পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্যাক্সি, অটো সবই বন্ধ থাকবে। তবে হাসপাতাল, নার্সিংহোম, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা কেন্দ্র এবং প্রতিষেধক কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য ওই সমস্ত যানবাহন ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু, সমস্যা হল, একে তো টিকার দ্বিতীয় ডোজ় পাননি বহু সংখ্যক মানুষ। কোনও ডোজ় না-পাওয়াদের সংখ্যা আরও বেশি। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, প্রত্যাশীরা টিকাকেন্দ্রে পৌঁছবেন কী করে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজ়ের ব্যবধান বাড়ানোয় হয়রানি ও বিভ্রান্তি, দুই-ই বেড়েছে আম জনতার।
প্রতিষেধকের পর্যাপ্ত জোগান না থাকলেও জেলায় জেলায় টিকাকরণ কর্মসূচি থমকে নেই। অধিকাংশ জেলাতেই প্রথম ডোজ় দেওয়ার চলছে মূলত পরিবহণ কর্মী, হকার, সাংবাদিকদের মতো বিশেষ ক্ষেত্রের লোকদের জন্য। সোমবার, বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনে বীরভূমের দুই স্বাস্থ্য জেলায় দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে তাঁদের, যাঁরা ২৮ দিন আগে কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ় পেয়েছেন। সেই সংখ্যাও খুব বেশি নয়। তাই অটো টোটো বা মোটরবাইকে ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্রে পৌঁছতে বিশেষ অসুবিধে হয়নি।
কিন্তু, গোল বেধেছে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ় নিয়ে। টিকাকরণ কেন্দ্রে এসে দ্বিতীয় ডোজ় প্রত্যাশীদের শুনতে হচ্ছে, ৮৪ দিন পরে পাবেন। নানা জায়গায় এই বিভ্রান্তির জেরে বিক্ষোভও হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ় না-পেয়ে বিক্ষোভ হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর, ঘাটালে। আলিপুরদুয়ার পুরসভার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সোমবার সকাল
থেকে দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য লাইনে দাঁড়ানো ৪৫-ঊর্ধ্বদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তরফে শনিবারও তাঁদের বলা হয়, ৪২ দিন পরই তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ় পাবেন। কিন্তু এ দিন লাইনে দাঁড়ানোর দীর্ঘক্ষণ পরে ৮৪ দিনের আগে পাবেন না জানতে পেয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। নির্ঘণ্ট বদলের জেরে দ্বিতীয় ডোজ় না পেয়ে মালদহেও বিক্ষোভ হয়েছে। বিধিনিষেধের মধ্যে অসুবিধা করেও যাঁরা এ দিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন, তাঁদেরও দ্বিতীয় ডোজ় মিলবে না শুনে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে।
পুরুলিয়ায় ১২টি কেন্দ্র থেকে এ দিন দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে। তবে ভিড় দেখা যায়নি। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় সাইকেল, মোটরবাইক ও ব্যক্তিগত গাড়িতে টিকাকেন্দ্রে পৌঁছন কিছু মানুষ। বাঁকুড়ায় পরিবহণ বন্ধ থাকায় টিকাকেন্দ্রে পৌঁছতে সমস্যায় পড়েন মানুষজন। মুর্শিদাবাদেও কেউ দীর্ঘ পথ সাইকেলে, কেউ বা মোটরবাইকে টিকাকেন্দ্রে যান। একই ভাবে মোটরবাইক-সাইকেল অথবা গাড়ি, অটো ভাড়া করে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর, জামুড়িয়ার হাসপাতালে পৌঁছেছেন মানুষজন। অণ্ডাল থেকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে আসা কয়েক জন জানান, বাসে আসতে ৪০ টাকা খরচ হত, সেখানে ৪০০ টাকা দিয়ে এ দিন টোটো ভাড়া করে আসতে হয়েছে।