ত্রুটিপূর্ণ টেস্টকিট পাঠানোর অভিযোগ চিনের বিরুদ্ধে। ছবি: পিটিআই।
ভারতে ত্রুটিপূর্ণ করোনা টেস্ট কিট পাঠানোর অভিযোগ খারিজ করল চিন। তাদের দাবি, গুণগত মান পরীক্ষা করে ইউরোপ এবং লাতিন আমেরিকার বহু দেশেই কিট পাঠিয়েছে তারা। ঠিক মতো পরীক্ষা না করে আগেভাগেই টেস্ট কিট গুলিকে ত্রুটিপূর্ণ বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।
দেশ জুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে প্রাথমিক কিছু উপসর্গ দেখেই যাতে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়, তার জন্য গত ২৭ মার্চ ৫ লক্ষ অ্যান্টিবডি র্যাপিড টেস্ট কিটের বরাত দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
কিন্তু সেগুলি এসে পৌঁছনোর পর দেখা যায়, কিটগুলি ঠিক মতো কাজ করছে না। তাই রাজ্যগুলিকে সমস্ত অব্যবহত কিট ফিরিয়ে দিয়ে বলে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। তা দেখে চিনের বরাত বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন: বাড়িতে রেখেও চিকিৎসা করা যাবে কোভিড আক্রান্তের, নির্দেশিকায় জানাল সরকার
কিন্তু তাদের পাঠানো কিটগুলি ত্রুটিপূর্ণ বলে মানতে নারাজ চিন। দিল্লিতে চিনা দূতাবাসের তরফে বরাত বাতিল করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দূতাবাসের মুখপাত্র জি রং একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘‘ঠিক মতো পরীক্ষা না করে, দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো চিনা পণ্যকে ত্রুটিপূর্ণ বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আইসিএমআর-এর সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন আমরা।’’
জি রং আরও বলেন, ‘‘যে দুই সংস্থা কিটগুলি তৈরি করেছে, তারা ইউরোপ, এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকার বহু দেশেও কিট পাঠিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তা নিয়ে সমস্যা হয়নি। ব্যবসা-বাণিজ্যে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে চিনের। পড়শি দেশগুলির প্রতি চিন আন্তরিকও। আশাকরি এগুলি মাথায় রাখবে ভারত এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার সামনে সমস্যার কথা পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরবে।’’ দক্ষ লোকের হাতে, সমস্ত নিয়মাবলী না মেনে পরীক্ষা হলে, কিটগুলি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনা-সংক্রমণ ছড়ানোর দায়ে চিনের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবির হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
গুয়াংঝৌ ওন্ডফো বায়োটেক এবং ঝুহাই লিভজন ডায়াগনস্টিকস নামের যে দুই চিনা সংস্থা ওই কিটগুলি তৈরি করেছিল, তারা জানিয়েছে, চিনের ন্যাশনাল মেডিক্যাল প্রডাক্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনএমপিএ) থেকে গুণগত মান পরীক্ষার করেই কিটগুলি পাঠানো হয়েছিল। পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতেও একদফা পরীক্ষা হয়। তার পরই কিটগুলি কেনায় অনুমোদন দেয় আইসিএমআর। তবেসঠিক ফলাফল পেতে সক্রিয় ভাইরাসের চিহ্ন হিসাবে আরএনএ ( রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড), অ্যান্টিজেন এবং দু ধরনের অ্যা্ন্টিবডির -র উপস্থিতির সময়ের উপরে ভিত্তি করে বিভিন্ন রকমের পরীক্ষা করা হয়। এ ক্ষেত্রে যথাযথ পরীক্ষা এবং উপযুক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করা জরুরি বলে জানিয়েছে ওন্ডফো বায়োটেক।
এর আগে, চিনের পাঠানো করোনা টেস্ট কিটের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল ব্রিটেনও। স্পেন, চেক প্রজাতন্ত্র, জর্জিয়া, তুরস্ক এবং নেদারল্যান্ডস থেকেও একই অভিযোগ সামনে আসে। ভারতে পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজস্থানের তরফেই প্রথমে এই কিটগুলিতে সমস্যা রয়েছে বলে জানানো হয়।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)