প্রতীকী ছবি।
আগামী ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে নির্বাচনী পরিকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে ৩০ কোটি দেশবাসীকে দুই ডোজ় করে মোট ৬০ কোটি কোভিড শট দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে কেন্দ্র। এই প্রতিষেধকের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞমণ্ডলীর প্রধান, ভি কে পল শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন। সাধারণ হিমঘরগুলিকেই টিকা সংরক্ষণের কাজে লাগানো হবে বলে ঠিক হয়েছে।
পল ব্যাখ্যা করে জানান, অন্তত চারটি প্রতিষেধকের ক্ষেত্রে ভারতীয় হিমঘরে প্রাপ্ত ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কার্যকরী। সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপন্ন কোভিশিল্ড, ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন, জ়াইডাস ক্যাডিলার জ়াইকোভ-ডি এবং রাশিয়ার স্পুটনিক— এই চারটি টিকাই ওই তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য বলে জানিয়েছেন পল। ‘‘সুতরাং সাধারণ হিমঘরগুলিকে কাজে লাগাতে এ ক্ষেত্রে অসুবিধা নেই’’, বলেন তিনি।
এ ছাড়া ফাইজ়ার এবং মডার্নার মতো যে টিকাগুলি সংরক্ষণের জন্য প্রায় -৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা লাগে, সেই পরিকাঠামো তৈরির কাজও চলবে বলে জানিয়েছেন পল। তাঁর মতে, এমনিতেই সামনের বছরের দ্বিতীয়ার্ধের আগে ওই টিকা ভারতের হাতে আসার সম্ভাবনা কম। তার মধ্যে পরিকাঠামো তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতে ফাইজ়ার এবং মডার্না তৈরির ব্যাপারেও সরকার কথাবার্তা চালাচ্ছে বলে তিনি জানান। আজ পল ফিকি-র বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ফাইজ়ার, সিরাম আর বায়োটেক জরুরি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র চেয়ে যে আবেদন করেছে, সব দিক খতিয়ে দেখেই তার সিদ্ধান্ত হবে। সুরক্ষা, অনাক্রম্যতা এবং কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করেই মতামত জানাবেন বিশেষজ্ঞেরা।
আরও পড়ুন: চাপে ফের কেন্দ্র আলোচনার রাস্তায়
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আমেরিকায় দেওয়া হবে ফাইজারের প্রথম টিকা: ট্রাম্প
প্রথম পর্বে যে ৩০ কোটি দেশবাসীকে টিকা দেওয়া হবে, তার মধ্যে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী, সেনা-পুলিশ-পুরকর্মী এবং প্রবীণেরা। এ দিন হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল বিজ কেন্দ্রকে চিঠি লিখে ওই তালিকায় জনপ্রতিনিধিদেরও অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এর মধ্যেই টিকাকরণ সংক্রান্ত ১১২ পাতার একটি নতুন নির্দেশিকা (এসওপি) প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তাতে বলা হয়েছে, প্রতি দফায় ১০০ জনকে টিকা দেওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। জোগান অনকূল হলে সেটা ২০০ অবধি যেতে পারে। টিকা প্রদানের কাজে থাকবে পাঁচ জনের এক-একটি দল। কোনও ডাক্তার, নার্স বা ফার্মাসিস্ট বা স্বাস্থ্যকর্মী হবেন দলের প্রধান। দ্বিতীয় আধিকারিকের কাজ হবে রেজিস্ট্রেশন খতিয়ে দেখা এবং টিকাকেন্দ্রের প্রবেশপথে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলানো। তৃতীয় জন নথিপত্র পরীক্ষার দায়িত্বে থাকবেন। চতুর্থ এবং পঞ্চম জনের কাজ হবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং জরুরি নির্দেশগুলি ঘোষণা করা।
কোভিড সংক্রমণের নিরিখে ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও এখানে মৃত্যুহার অনেক কম থেকেছে। শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিন অনুযায়ী মৃত্যুহার আরও কমে এখন দাঁড়িয়েছে ১.৪৫ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ৪৪২।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ৩০,০০৬। মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৯৮ লক্ষ ছাড়িয়েছে। তার মধ্যে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ৯৩ লক্ষের বেশি। ফলে সুস্থতার হার এখন ৯৪.৮৮ শতাংশ।