প্রতীকী ছবি।
আগামিকাল থেকে ৪৫ বছর পেরোলেই যে কোনও ব্যক্তির টিকাকরণ অভিযান শুরু করছে কেন্দ্র। দেশে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া করোনা ঠেকানো অনেকটাই নির্ভর করছে এই ধাপের টিকাকরণের উপরে। তাই কম টিকাকরণ হয়েছে এমন জেলাগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে টিকাকরণের হার বাড়ানোর উপরে জোর দিতে সব রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের বলেছে কেন্দ্র।
কোভিড টিকাকরণ গোষ্ঠীর চেয়ারপার্সন আর এস শর্মা, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ আজ রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে জানানো হয়েছে, আলোচনার মূল বিষয় ছিল দেশের মধ্যে টিকাকরণ কম হয়েছে এমন জেলাগুলিকে চিহ্নিতক করা। এ ধরনের জেলাগুলিতে সংক্রমণের হার বেশি থাকলে সেখানে টিকাকরণ বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে রাজেশ ভূষণেরা বলেন, ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা ব্যক্তিদের মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি। তাই তাঁদের টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, একমাত্র টিকাকরণই পারে দেশে সংক্রমণের ঢেউকে রুখতে।
গত আড়াই মাসের টিকাকরণ পর্বে দেখা গিয়েছে, কেন্দ্র পিছু গড়ে প্রায় ছয় শতাংশ প্রতিষেধক নষ্ট হচ্ছে। ফলে বহু মানুষ প্রতিষেধক পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই আগামী দিনে প্রতিষেধক নষ্টের পরিমাণ ছয় শতাংশ থেকে কমিয়ে এক শতাংশে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নিতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। দরকারে স্বাস্থ্যকর্মীদের ফের সামগ্রিক প্রশিক্ষণ দিতে বলা হয়েছে। প্রতিষেধক নষ্ট রুখতে আগে আসা প্রতিষেধক আগে খরচ করতে বলা হয়েছে। কোনও কেন্দ্রে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বা কম প্রতিষেধক জমা করতে বারণ করা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার অবশ্য লক্ষণ নেই গোটা দেশ জুড়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রায় ৫৩ হাজার ৪৮০ জন নতুন করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যাদের মধ্যে ৮০% রোগী পাওয়া গিয়েছে দেশের পাঁচটি রাজ্যে। এদের মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্রেই রয়েছেন প্রায় ৬১% করোনা রোগী। সংক্রমণের প্রশ্নে তালিকার উপরের দিকের রাজ্যগুলি হল কর্নাটক, পঞ্জাব, কেরল ও ছত্তীসগঢ়। দেশে এখনও পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্ত ১,২১,৪৯,৩৩৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার শিকার হয়েছেন ৩৫৪ জন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় এ দেশে মারা গেলেন ১,৬২,৪৬৮জন।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেহাল মহারাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় ওই রাজ্যে প্রায় ২৮ হাজার আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্যের অন্তত আটটি জেলার পরিস্থিতি বেশ খারাপ বলে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। মহারাষ্ট্র ছাড়া কর্নাটক, ছত্তীসগঢ়ে এক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় তিন হাজার। সংক্রমণ ঠেকানোর প্রশ্নে ভিড় কমানোর উপরে জোর দিয়েছে প্রশাসন। যেমন নাসিকে ভিড় নিয়ন্ত্রণে পাঁচ টাকার কুপন কিনে এক ঘণ্টার জন্য বাজারে থাকা যাবে। সংক্রমণের আঁচ এসে পড়েছে রাজধানী দিল্লিতেও। গত কয়েক সপ্তাহে দিল্লিতে সংক্রমণের হার বাড়ায় আজ থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে যাত্রীদের
পরীক্ষা শুরু করেছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। মূলত সংক্রমণ বাড়ছে এমন রাজ্যগুলি থেকে আসা যাত্রীদের প্রয়োজনে পরীক্ষা করে দেখবেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।