প্রতীকী ছবি।
নীতি পরিবর্তন করে বিদেশি প্রতিষেধকের ভারতে আসার পথ সুগম করার পাশাপাশি দেশীয় ভাবে তৈরি ভারত বায়োটেক সংস্থার কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকের উৎপাদন বাড়ানোর প্রশ্নে এগিয়ে এল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ কেন্দ্রের বায়োটেকনোলজি দফতর জানিয়েছে, ভারত বায়োটেকের বেঙ্গালুরু কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে ৬৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে সরকার। একইসঙ্গে আজ প্রতিষেধক উৎপাদনে সক্ষম তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। দেশ জুড়ে প্রতিষেধকের হাহাকার শুরু হওয়ার পরে মোদী সরকারের আধুনিকীকরণের ওই সিদ্ধান্ত আসলে দূরদর্শিতা ও সার্বিক পরিকল্পনার অভাবকেই প্রকট করে দিয়েছে বলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
বর্তমানে ভারত বায়োটেক সংস্থা যে ৬০-৭০ লক্ষের কাছাকাছি প্রতিষেধক প্রতি মাসে উৎপাদন করে তা এপ্রিলের শেষের মধ্যে বাড়িয়ে এক কোটি করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। জুলাই-অগস্ট মাসের মধ্যে ৬-৭ কোটি এবং সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতি মাসে ১০ কোটি কোভ্যাক্সিন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। বায়োটেকনোলজি দফতরের বক্তব্য, আগামী দিনে বিদেশি প্রতিষেধকের উপরে নির্ভরতা কমাতেই ওই বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
ঘাটতি মেটাতে দেরিতে হলেও প্রতিষেধক তৈরির তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার আধুনিকীকরণে হাত দিয়েছে কেন্দ্র। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র সরকারের অধীনে থাকা মুম্বইয়ের হাফকাইন বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কর্পোরেশনের আধুনিকীকরণে ৬৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সংস্থা আধুনিকীকরণের কাজ শেষ করতে এক বছরের সময়সীমা চাইলেও, প্রতিষেধকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে কেন্দ্র ওই কাজ ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, আধুনিকীকরণের কাজ শেষ হলে ওই কারখানা থেকে প্রতি মাসে দু’কোটি প্রতিষেধক উৎপাদন হবে। এ ছাড়া কেন্দ্রের হাতে থাকা হায়দরাবাদের ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড (আইআইএল) ও বুলন্দশহরের ভারত ইমিউনোলজিক্যালস অ্যান্ড বায়োলজিক্যালস লিমিটেড-এই দুই সংস্থার আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। অগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে আধুনিকীকরণের কাজ শেষ হলে ফি মাসে এক থেকে দেড় কোটি প্রতিষেধক উৎপাদিত হবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, গোটা দেশে যখন প্রতিষেধকের অভাব দেখা দিয়েছে, প্রথম ডোজ় নিয়ে দ্বিতীয় ডোজ়ের খোঁজে হত্যে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ, তখন এত দেরি করে কেন সংস্থাগুলির আধুনিকীকরণে এগিয়ে এল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কংগ্রেসের অভিযোগ, অক্টোবর মাসেই স্পষ্ট হয়ে যায় দেশবাসীর জন্য কত প্রতিষেধকের প্রয়োজন হবে, আর দেশীয় সংস্থাগুলি কত প্রতিষেধক তৈরি করতে সক্ষম। তার পরেও এত দেরি করে আধুনিকীকরণে হাত দেওয়া আসলে সামগ্রিক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে মোদী সরকারের ব্যর্থতাকেই ফের প্রকট করে দিয়েছে। এই সংস্থাগুলির আধুনিকীকরণে ছ’মাস আগে হাত দিলে এখন সেগুলি উৎপাদনক্ষম হতে পারত। এতে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচানো যেত বলেই দাবি কংগ্রেসের।