ফাইল চিত্র।
পরম্পরা মেনে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রার আচারের আয়োজন সম্পূর্ণ। তবে কোভিড-কালে একটু ফাঁকও থেকে যাচ্ছে।
রীতিমাফিক পুরীর শ্রী মন্দিরে জগন্নাথদেব তাঁর রত্নসিংহাসন থেকে স্নানবেদীতে আসীন হওয়ার আগে সোনার ঝাড়ু দিয়ে বেদন পরিমার্জন করেন পুরীর গজপতি রাজা দিব্যসিংহ দেব। তিনি আবার জগন্নাথদেবের প্রধান সেবায়েতও। রথযাত্রাতেও বলরাম, সুভদ্রা, জগন্নাথের রথ চলতে শুরু করার আগে সোনার ঝাড়ু দিয়ে পথ পরিষ্কার করার রীতি চালু আছে। এই প্রথার নাম ‘ছেরা পহরা’। কিন্তু এ বছর স্নানযাত্রায় এই রীতি সম্পন্ন করার জন্য তিনি থাকতে পারবেন না।
জগন্নাথ মন্দির সূত্রের খবর, রাজার পরিবারের ঘনিষ্ঠ কর্মচারীর কোভিড হওয়ায় তিনি এখন নিভৃতবাসে রয়েছেন। ফলে, তিনি মন্দিরে এলে কোভিড-বিধি ভঙ্গ করা হতো। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, রাজার অনুপস্থিতিতে জগন্নাথদেবের সেবার পরম্পরা কী ভাবে অটুট থাকবে ?
মন্দিরে বর্ষীয়ান সেবায়েত তথা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রামচন্দ্র দয়িতাপতি বুধবার বলেন, “রীতিমাফিক রাজার একজন প্রতিনিধি তাঁর হয়ে ‘ছেরা পহরা’র কাজটি করবে। তবে গোটা অনুষ্ঠানই পুরোপুরি ভক্তশূন্য ভাবে হবে।” স্নানযাত্রার আগে থেকেই পুরী ও লাগোয়া এলাকায় কার্ফু জারি করেছে ওড়িশা প্রশাসন। ফলে, মন্দিরের বাইরে দাঁড়িয়েও কেউ স্নানবেদীতে আসীন জগন্নাথদেবের স্নান দেখতে পারবেন না।
ওড়িশায় এক মাত্র পুরীর মন্দিরের ভক্তশূন্য ভাবে রথযাত্রা সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবীন পট্টনায়কের প্রশাসন। অন্যত্র রথ টানা যাবে না। স্নানযাত্রা হল রথযাত্রার পূর্বাভাস। লোকবিশ্বাস মতে, ১০৮ ঘড়া জলে স্নানের পর জগন্নাথের জ্বর হলে তিনি ‘অনশরপেন্ডি’তে অন্তরালবর্তী হন। তখন কয়েকজন বাছাই সেবায়েত ছাড়া কারও বিগ্রহের কাছে যাওয়ার অনুমতি নেই। জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রা সুস্থ হলে রথযাত্রা। এ বার তা সম্পন্ন হবে ১২ জুলাই। স্নানযাত্রায় অনূর্ধ্ব ৫০০ জন সেবায়েত কোভিড-পরীক্ষা করিয়ে আচার সম্পন্ন করার অনুমতি পেয়েছেন। ওড়িশায় কোভিড-পরিস্থিতি এখন কিছুটা ভাল। তবে ভুবনেশ্বর, কটকে সংক্রমণ ভালই হচ্ছে। পুরীতে বুধবার ২৮৯ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। রথযাত্রার আগে পুরীর পরিস্থিতি নিয়েও সতর্ক রাজ্য সরকার।