ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দিল্লির একাধিক ‘হটস্পট’-এ ব্যাপক সংখ্যায় পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিল দিল্লি সরকার। চলতি সপ্তাহ থেকে দিল্লির নিজামুদ্দিনের তবলিগি জামাতের জমায়েত এলাকা, দিলশাদ গার্ডেনের মতো যে সব জায়গায় কোভিড-১৯ ছড়িয়েছে বা ছড়ানোর আশঙ্কা প্রবল, সেই সব ‘হটস্পট’-এ বাড়ি বাড়ি ঘুরে করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার।
শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে তা জানার একমাত্র রাস্তা হল পরীক্ষা করে দেখা। কিন্তু কিটের অভাবে, চাইলেও তা করতে পারছিল না সরকার। গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় সম্প্রতি নীতিতে পরিবর্তন এনে অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্র।
দিল্লিবাসীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল আজ যে বার্তা দিয়েছেন, তাতে মূলত পাঁচটি ‘টি’-এর উপরে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। তার প্রথম ‘টি’-ই হল টেস্ট বা পরীক্ষা। তিনি জানান, দিল্লি সরকার ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার পরীক্ষা কিটের বরাত দিয়েছে। এ ছাড়া কেন্দ্র দেবে ১ লক্ষ অ্যান্টিবডি পরীক্ষার কিট। যা দিয়ে মূলত নিজামুদ্দিন ও দিলশাদ গার্ডেনের মতো ‘হটস্পট’গুলির বাসিন্দাদের মধ্যে কতটা সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা দেখা হবে। কেজরীবালের মতে, সংক্রমিত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে নিভৃতবাসে পাঠাতে হবে। নয়তো লকডাউন শেষ হতেই সংক্রমিতেরা অন্যত্র গিয়ে সংক্রমণ ছড়াবেন। ব্যর্থ হবে গোটা লড়াই।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় পথ দেখাচ্ছে ভিলওয়াড়া
দ্বিতীয় ‘টি’ হল ট্রেসিং। সংক্রমিত ব্যক্তিরা গত দু’সপ্তাহে কাদের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন, তাঁদের খুঁজে বার করা। আজই নিজামুদ্দিনের
তবলিগি জামাতে উপস্থিত দু’হাজারের বেশি লোকের ফোন নম্বর দিল্লি পুলিশকে দিয়েছে কেজরীবাল সরকার। ঘরে কোয়রান্টিনে থাকা ২৭ হাজার ৭০২ জনের মোবাইল নম্বর বর্তমানে নজরদারিতে রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তৃতীয় ‘টি’ হল ট্রিটমেন্ট বা চিকিৎসা। বর্তমান পরিকাঠামোয় দিল্লি সরকার একসঙ্গে তিন হাজার রোগীর চিকিৎসা করতে সক্ষম। এই মুহূর্তে দিল্লিতে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৫৫০। ইতিমধ্যেই দিল্লির তিনটি সরকারি হাসপাতাল শুধু কোভিড-১৯-এর চিকিৎসার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। কেজরীবাল বলেন, ‘‘করোনা রোগীর সংখ্যা যদি ৩০ হাজারেও পৌঁছয়, সে ক্ষেত্রে হাসপাতালের পাশাপাশি তাঁদের হোটেল, ব্যাঙ্কোয়েট হলে রাখা হবে। সেই মতো পরিকল্পনা সেরে ফেলা হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে সংক্রমিতের বয়স পঞ্চাশের বেশি হলে হাসপাতালে এবং তার চেয়ে কম বয়সিদের হোটেল-ধর্মশালায় স্থানান্তরিত করা হবে। ৩০ হাজার রোগীর জন্য প্রয়োজন হবে কমপক্ষে ৪০০টি ভেন্টিলেটর। তা-ও জোগাড়ের চেষ্টা চলছে বলে জানান কেজরীবাল।
চতুর্থ ‘টি’ হল টিম ওয়ার্ক— দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর মতে, কোভিড-১৯-কে নির্মূল করতে হলে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। কোনও রাজ্যের পক্ষে একা কিছু করা সম্ভব নয়। কোনও করোনা রোগী এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গেলে, উভয় রাজ্যকেই পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে, সেই ব্যক্তির উপরে নজর রাখতে হবে।
পঞ্চম ‘টি’ হল ট্র্যাকিং ও মনিটরিং। দিল্লি সরকারের করোনা মোকাবিলা পরিকল্পনা বাস্তবের মাটিতে রূপায়ণ হচ্ছে কি না, কেজরীবাল স্বয়ং ২৪ ঘণ্টা নজরদারি রাখবেন বলে আজ ঘোষণা করেছেন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)