ছবি এএফপি।
দিন কয়েক আগেও দেশে দিনে ১৫-১৬ হাজার মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। ইদানীং, সেই সংখ্যাটা ১৮-১৯ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে। সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ আনলক-১ পর্বের শেষ দিনে ৫০৭ জন করোনা-রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সাম্প্রতিক কালে এক দিনে এত জন করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে কি না, তা মনে করতে পারছেন না অনেকেই। সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং মৃত্যুমিছিলে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকেরা।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৮,৬৫৩ জন। দেশে মোট আক্রান্ত ৫.৮৫ লক্ষের বেশি। যদিও আন্তর্জাতিক সমীক্ষা উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা বলছে, দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা আজ রাতেই ৬ লক্ষ পেরিয়েছে। গত ২৬ জুন ওই সমীক্ষার ভিত্তিতেই ভারতে রোগীর সংখ্যা ৫ লক্ষ পেরোয়। অর্থাৎ ১ লক্ষ রোগী বেড়েছে ৫ দিনে। বিশ্বে তৃতীয় স্থানে থাকা রাশিয়ায় রোগীর সংখ্যা ভারতের চেয়ে মাত্র ৫০ হাজার বেশি।
মোট আক্রান্তের ৬০ শতাংশই মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও দিল্লিতে। তবে আশার কথা, সংক্রমণ বাড়লেও সুস্থতার হারও বাড়ছে। বর্তমানে তা ৫৯.৪৩ শতাংশ। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষার সংখ্যা ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৯৩১। তার মধ্যে আট শতাংশের রিপোর্ট পজ়িটিভ। গত ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮৮ লক্ষ ২৬ হাজার ৫৮৫।
আরও পড়ুন: এক সফরে দুই বার্তা দিতে রাজনাথ কাল লাদাখে
সংক্রমণের নিরিখে দেশে শীর্ষস্থানে মহারাষ্ট্র। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে উদ্ধব ঠাকরে সরকার। গত ২৪ ঘণ্টায় মুম্বইয়েই নতুন করে ৯০৩ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এই নিয়ে মুম্বইয়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ মুম্বইয়ে ১৪৪ ধারা জারির কথা জানিয়েছে। এর ফলে আমজনতার গতিবিধি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হবে। দিল্লির অবস্থারও তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। গত কাল নতুন করে দু’হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। রাজধানীর করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আজ বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই বৈঠকে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন, ক্যাবিনেট সচিব-সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।
আরও পড়ুন: চিনের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক ত্রিশূল’ হামলা দিল্লির
সংক্রমণে কালই দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল তামিলনাড়ু। সূত্রের খবর, ওই রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৮৮২ জন। যার ফলে তামিলনাড়ুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
বাড়তে থাকা সংক্রমণের আবহে অনেক জায়গায় আবার শিক্ষা এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করেছে। হরিয়ানা সরকার জানিয়েছে, আগামী ২৭ জুলাই থেকে স্কুলগুলি খুলবে। গুরুগ্রামের ফরিদাবাদের শপিং মলগুলি আজ খুলেছে। একটি শপিং মলের ম্যানেজার বলেন, ‘‘যাবতীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাঁরা শপিং মলে আসছেন তাঁদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারও দেওয়া হচ্ছে।’’
অসমেও করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। করোনা চিকিৎসায় প্লাজ়মা প্রয়োগে কেন্দ্র আপত্তি জানালেও দিল্লির পর অসমের বিজেপি সরকার সে রাজ্যে প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক তৈরি করবে। সূত্রের খবর, আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যেই গুয়াহাটিতে ওই প্লাজ়মা ব্যাঙ্ক চালু হয়ে যাবে।