রাহুল গাঁধী ও রঘুরাম রাজন।
এক দিকে করোনার মতো অতিমারির চোখরাঙানি। অন্য দিকে লকডাউনের জেরে বিপর্যস্ত অর্থনীতি। এই শাঁখের করাত থেকে মুক্তির উপায় কী? এই পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ মানুষের পাশে কেন্দ্রীয় সরকারকে দাঁড়ানোর পরামর্শ আগেই দিয়েছিলেন রঘুরাম রাজন। এ বার রাহুল গাঁধীর সঙ্গে একটি ভিডিয়ো কথোপকথনে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর বললেন, দেশ জুড়ে লকডাউনের ক্ষতি থেকে দেশের গরিব মানুষকে বাঁচাতে ৬৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন।
রঘুরাম রাজন ও রাহুল গাঁধী, দু’জনের ভিডিয়ো কথোপকথন প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। ভারতীয় অর্থনীতিতে করোনার মতো অতিমারির কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়েই শুরু হয়েছিল দু’জনের আলোচনা। স্বাভাবিক ভাবেই উঠে আসে লকডাউন প্রসঙ্গও। রাজন মন্তব্য করেন, লকডাউনের মেয়াদ দীর্ঘ হলে তা টেকসই অর্থনীতির পক্ষে খারাপ। লকডাউনের সময়ে দেশের পরিযায়ী শ্রমিক ও কৃষকদের জীবনযাপন নিয়ে বলতে গিয়ে রাজন বলেন, এখন অনেকেই কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন। অনিশ্চয়তাও বাড়ছে। দেশের গণবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে তাঁদের খাবার দেওয়া উচিত বলে মনে করেন রাজন। একই সঙ্গে তাঁদের হাতে টাকা দেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। এর ফাঁকেই রাহুল প্রশ্ন করেন, ‘‘কত টাকা লাগবে?’’ রাজন উত্তর দেন, ‘‘৬৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। আমাদের দেশের জিডিপির সেই টাকা দেওয়ার ক্ষমতাও আছে। কারণ আমাদের জিডিপি ২০০ লক্ষ কোটির মতো।’’
রাজন আরও বলেন, ‘‘লকডাউন তোলার ক্ষেত্রে আমাদের আরও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। আমাদের নিয়ন্ত্রিত ভাবে লকডাউন থেকে বেরতে হবে। কারণ মানুষ খুব বেশি দিন বসে থাকতে পারবেন না। করোনা আক্রান্তদের আইসোলেট করার পর এই লকডাউন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’’
আরও পড়ুন: আমি ধ্বংস হয়ে গেলাম: অমিতাভ
বর্তমানে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত রঘুরাম রাজন। রাহুল গাঁধীর সঙ্গে তাঁর আধ ঘণ্টার কথোপকথনে উঠে আসে এই পরিস্থিতিতে ভারত ও আমেরিকার তুলনার কথাও। রাজন রাহুলকে ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, এই পরিস্থিতিতে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে ফারাক কোথায়? রাহুল বলেন, ‘‘দু’দেশের মধ্যে বৈষম্য আমাকে ভাবায়। ভারতে অনেক সামাজিক পরিবর্তন প্রয়োজন। প্রতিটি রাজ্যের আলাদা আলাদা সমস্যা রয়েছে। তাই তার একটি মাত্র সমাধান পুরো দেশের জন্য কার্যকরী হবে না।’’ করোনার বিরুদ্ধে এই লড়াইকে ‘ঐতিহাসিক’ বলেও ব্যাখ্যা করেছেন রাহুল গাঁধী।
আরও পড়ুন: “অনিবার্যের কাছে নিজেকে সঁপে দিতেই হয়”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)