মুম্বইয়ে করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসছে মহারাষ্ট্রে। ছবি: পিটিআই
দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও এক জনের মৃত্যু হল। এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৩। পাশপাশি নোভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে ১৩৭ জনের। অন্য দিকে সারা বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৭ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজারের বেশি। ছড়িয়েছে বিশ্বের ১৪৫টি দেশে। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কারও নিশ্চিত না হলেও করোনা সন্দেহে অনেকেই হাসপাতালে কোয়রান্টিন রয়েছেন। এ ছাড়া হোম কোয়রান্টিনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অনেককে।
করোনা আক্রান্ত হয়ে এ বার মহারাষ্ট্রে এক জনের মৃত্যু হল। সম্প্রতি তিনি দুবাইয়ে গিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডে বেড়াতে গিয়েছিলেন কর্নাটকের কলবুর্গি জেলার বছর কুড়ির এক তরুণী। মঙ্গলবার তাঁর করোনা সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্নাটকের স্বাস্থ্য দফতর। কলবুর্গি জেলাতেই যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল, তাঁর সংস্পর্শে আসা ৬০ বছরের এক বৃদ্ধাও করোনা আক্রান্ত। এ ছাড়া সব মিলিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৭। মহারাষ্ট্রে যাঁদের হোম কোয়রান্টিনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের হাতে স্ট্যাম্প দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আবার সর্দি-কাশি হলেই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্র। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন নিজেই নিজেকে কোয়রান্টিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি কেরলের একটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক বিদেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই তথ্য গোপন করেছিলেন বলে অভিযোগ। পরে তাঁর করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে।
সারা বিশ্বে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও কিছুটা স্বস্তির খবর দিয়েছে আমেরিকা। পরীক্ষামূলক ভাবে করোনার প্রতিষেধক টিকার প্রয়োগ শুরু করে দিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। তবে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশ্বে মৃত বেড়ে হয়েছে ৭১৭১। আক্রান্ত ১ লক্ষ ৮২ হাজার ৬০৮ জন। তবে তার মধ্যে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৯ হাজার ৮৮৩ জন। ফিলিপিন্সে সমস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের সমস্ত সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। ফ্রান্সে স্কুল, কলেজ, বাজার, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সব কিছু বন্ধ। বৃহস্পতিবার থেকে হংকং-এ নয়া নিয়ম জারি হচ্ছে। তাতে বলা হয়েছে, এই শহরে যাঁরাই ঢুকবেন, ন্যূনতম ১৪ দিনের জন্য কোয়রান্টিন বাধ্যতামূলক। কম্বোডিয়ায় নতুন করে ১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: করোনা: ভারতের হাতে ৩০ দিন, সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞদের
পশ্চিমবঙ্গে কেউ আক্রান্ত না হলেও হোম কোয়রান্টিনের সংখ্যা বাড়ছে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১২ হাজার ২০০ জনকে করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অবশ্য ২৪৮ জনের আইসোলেশনের সময় শেষ হওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১১৯৪২ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১০ জন। এ রাজ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত এবং অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে সীমানায় স্বাস্থ্য শিবির বাড়ানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ১০০টি এমন চেকপোস্ট তৈরি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: মহামারি আইন চালু হল বাংলাতেও
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ