চতুর্থ দফার লকডাউন পর্বে পা রেখেছে গোটা দেশ। ৩১ মে অবধি চলবে এই দফার লকডাউন। তবে দেশ জুড়েই কিছুটা শিথিল হয়েছে নিয়ম। কোন পরিষেবা কোন জোনে পাওয়া যাবে, তা নির্ধারিত হবে কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে। তবে কোন এলাকা কোন জোনের আওতায় পড়বে, তা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তাদের পরিস্থিতি বুঝে এই নির্দেশিকা প্রয়োগ করবে।
সন্ধ্যা সাতটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত দেশ জুড়ে গ্রিন, অরেঞ্জ, রেড এবং কন্টেনমেন্ট জোনে চলবে নৈশ কার্ফু। এর পাশাপাশি জোন বিশেষে কিছু কিছু পরিষেবায় ছাড় পাওয়া যাবে। তবে চার জোনেই ৬৫ বছরের বেশি বয়সি, অন্তঃসত্ত্বা এবং দশ বছরের কম বয়সি শিশুদের রাস্তায় বার না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গ্রিন, অরেঞ্জ, রেড এবং কন্টেনমেন্ট, এই চার রকম জোনেই বন্ধ থাকবে মেট্রো ও বিমান পরিষেবা। অর্থাৎ দেশের কোনও অংশেই মিলবে না এই দুই যান।
বিশেষ ট্রেনের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা পাওয়া যাবে কন্টেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি তিন জোনেই।
আন্তঃরাজ্য সড়কপথে যোগাযোগ হবে কন্টেনমেন্ট জোন ছাড়া গ্রিন, অরেঞ্জ এবং রেড, এই তিন অংশেই।
স্কুল, কলেজ-সহ সবরকম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে চার জোনেই।
একইরকম ভাবে চার জোনে খোলা থাকবে না কোনও হোটেল।
চার জোনেই বন্ধ থাকবে সিনেমা হল।
শপিং মলের দরজাও খুলছে না কোনও জোনেই।
রেস্তরাঁয় গিয়ে খাওয়ার সুযোগও আপাতত নেই চার জোনেই।
চার জোনেই বন্ধ জিমন্যাসিয়াম পরিষেবাও। শরীরচর্চার পর্ব সারতে হবে বাড়িতেই।
গ্রিন, অরেঞ্জ রেড এবং কন্টেনমেন্ট—চার জোনেই বন্ধ থাকবে সবরকম ধর্মীয় উপাসনার স্থান।
নিষিদ্ধ যে কোনও ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক জমায়েত, যেখানে অনেক লোকের হাজির থাকার সম্ভাবনা আছে।
নির্দিষ্ট সময় বিধি মেনে মদের দোকান খোলা থাকবে গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে। কন্টেনমেন্ট জোনে বন্ধ থাকবে এই মদের দোকান।
সিগারেটের দোকানের ক্ষেত্রেও বহাল থাকছে এই নিয়ম। কন্টেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি তিন জোনে খোলা থাকবে সিগারেটের দোকান।
একই নিয়ম জারি পানের দোকানের জন্যেও। নির্দিষ্ট সময় বিধি অনুসরণ করে তা খোলা থাকবে গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে। কন্টেনমেন্ট জোনে বন্ধ থাকবে এই মদ, পান ও সিগারেট, তিন নেশাদ্রব্যের দোকান-ই।
কন্টেনমেন্ট জোন বাদে বাকি তিন জোনে সেলুন এবং স্পা খোলা থাকবে।
বিভিন্ন ক্লিনিক এবং হাসপাতালের আউটডোর পেশেন্ট বিভাগ খোলার অনুমতিও দেওয়া হয়েছে কন্টেনমেন্ট এলাকা ছাড়া এই তিন জোনকে।
অটো, ট্যাক্সি, দু’চাকার এবং চার চাকার গাড়ি চলতে পারবে গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে। তবে অটো ও ট্যাক্সির ক্ষেত্রে চালক ছাড়া আর একজন করে যাত্রী উঠতে পারবেন।
দু’চাকার বাহনে গ্রিন ও অরেঞ্জ জোনে চালক ছাড়া আর এক জনই উঠতে পারবেন। রেড জোনে অবশ্য দু’চাকার গাড়িতে চালক ছাড়া অন্য সওয়ারির অনুমতি দেওয়া হয়নি।
চার চাকার গাড়িতে চালক ছাড়া আরও দু’জন উঠতে পারবেন গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে। কন্টেনমেন্ট জোনে অবশ্য অটো, ট্যাক্সি, দু’চাকার বা চার চাকাবিশিষ্ট কোনও গাড়িকেই চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
স্টেডিয়াম ও স্পোর্টস কমপ্লেক্স খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে। তবে অনুশীলন বা খেলা হবে দর্শকশূন্য মাঠেই। কন্টেনমেন্ট জোনের ক্ষেত্রে এই অনুমতি পাওয়া যায়নি।
আন্তঃজেলা এবং একই জেলার বিভিন্ন অংশের মধ্যে পরিবহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনকে। কিন্তু কন্টেনমেন্ট জোনকে রাখা হয়েছে এই পরিষেবারও বাইরে।
শহরাঞ্চলের শিল্পক্ষেত্রে কাজ চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে। কন্টেনমেন্ট জোন থাকবে এই পরিষেবার বাইরেই।
শহরাঞ্চলের গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে বিভিন্ন নির্মাণের থমকে যাওয়া কাজ আবার শুরু করা যাবে। তবে কন্টেনমেন্ট জোনে এই পরিষেবা পাওয়া যাবে না।
শপিং মলের বাইরে কোনও দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কন্টেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি তিন জোনে।
এই তিন জোনেই ই-কমার্সে অত্যাবশ্যকীয় ও সাধারণ পণ্য পাওয়া যাবে। তবে কন্টেনমেন্ট জোনে নিষিদ্ধ এই পরিষেবা।
সরকারি ও বেসরকারি অফিসে কাজ শুরু হতে পারে গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে। তবে রেড জোনে কর্মীর হাজিরা হতে হবে ৩৩ শতাংশ। কন্টেনমেন্ট জোনে বন্ধ থাকবে সব রকম অফিস।
ব্যাঙ্কিং পরিষেবা জারি থাকবে গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে।
ক্যুরিয়ার ও ডাক পরিষেবাও পাওয়া যাবে কন্টেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি তিন অংশে।
গ্রিন, অরেঞ্জ ও রেড জোনে বাড়িতে পরিচারক ও পরিচারিকাকে কাজে আসার অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। কন্টেনমেন্ট জোন হলে নিষিদ্ধ এই পরিষেবাও।