গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
মঙ্গলবার কেন্দ্রের পাঠানো পর্যবেক্ষক দল স্বীকার করল, মহারাষ্ট্রে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোভিড রোগীদের চিহ্নিত করা, পরীক্ষা করানো এবং তাঁদের আলাদা করে চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাফিলতি দেখিয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের টিমের পর্যবেক্ষণে চিন্তা বাড়িয়েছে গোটা দেশের। মহারাষ্ট্রের এক মন্ত্রী ঈশ্বরসিন পটেল টিকা নেওয়ার পরও কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন।
ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের অনেক জায়গায় লকডাউন জারি করা হয়েছে। তা ছাড়া আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত কড়া সুরক্ষাবিধি মেনে চলতে হবে সমগ্র রাজ্যকেই। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে অক্ষরে অক্ষরে মানতে হবে করোনা সংক্রান্ত সমস্ত নিয়ম কানুন। রাজ্যবাসী এবং রাজ্যের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, নিয়ম ভাঙলে আর্থিক ক্ষতিপূরণ তো দিতে হবেই। পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে অফিস, বাজার, সিনেমাহল, শপিং মলের মতো জনসমাগমের জায়গা। কিন্তু এত কিছু করেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সংক্রমণ। মহারাষ্ট্রের মুখ্যসচিবকে একটি চিঠি লিখে কেন্দ্রের তরফে সে কথা জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘রাত্রিকালীন কার্ফু, আংশিক লকডাউন করে খুব একটা লাভ হয়নি। কোভিড সংক্রমণে লাগাম পরাতে অবিলম্বে বাসস্ট্যান্ড, স্টেশনের মতো জায়গায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষার উপর জোর দেওয়া উচিত রাজ্যের।’
শুধু মহারাষ্ট্র নয়, দেশের আরও যে ৯ রাজ্যে সংক্রমণ এই মুহূর্তে ঊর্ধ্বমুখী, তার মধ্যে বেশ কয়েকটি রাজ্যে সোমবার সংক্রমণ সামলাতে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ভোটমুখী তামিলনাড়ুতেও জন সমাগমে রাশ টেনেছে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে তামিলনাড়ুর সচিবালয়ের বৈঠক ডাকার ক্ষেত্রেও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু মহারাষ্ট্রে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৫,০৫১ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪৮ জনের। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৫৪৭ জন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৪ হাজার ৪৯২ জন। মৃতের সংখ্যা ১৩১ জন। মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ৩০,৩৯৩৯৪ জনের টিকাকরণ হয়েছে দেশে। করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৫০ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় যত করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তার মধ্যে ২.৮০ শতাংশ করোনা সংক্রমিত বলে জানা গিয়েছে রিপোর্টে। দেশের মোট করোনা সংক্রমণের হার আপাতত ৫ শতাংশ।