COVID19

মুম্বইয়ে বন্ধ রেস্তোরাঁ, মাস্ক না পরায় জরিমানা, দেশে দৈনিক সংক্রমণ পেরলো ৩০ হাজার

পরিসংখ্যান দেখে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, এরই মধ্যে শক্তি বাড়াতে শুরু করেছে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। যার ধাক্কা সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে মহারাষ্ট্র।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২১ ১৩:৪২
Share:

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৩০ হাজার পেরিয়ে গেল। গত এক সপ্তাহ ধরে দৈনিক আক্রান্তের এই সংখ্যা ২০ হাজারের কোঠায় ঘোরাফেরা করছিল। বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিন জানাল, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ৮৭১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দেশে। গত বছর ডিসেম্বর থেকে শুরু থেকে চলতি বছরে এই প্রথম ৩০ হাজার পেরোল দৈনিক সংক্রমণ।

Advertisement

বুধবারই দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সতর্ক করেছিলেন করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ব্যাপারে। মোদী বলেছিলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুতেই রুখে দিতে হবে। তবে বৃহস্পতিবারের পরিসংখ্যান দেখে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, এরই মধ্যে শক্তি বাড়াতে শুরু করেছে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। যার বড় ধাক্কা আপাতত সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে মহারাষ্ট্র।

বুধবার রাতেই মুম্বইয়ের একটি রেস্তোরাঁয় তালা ঝুলিয়েছে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। সেখানে করোনা সুরক্ষা বিধি মানা হচ্ছিল না বলে জানিয়েছে প্রশাসন। ২৪৫ জনকে মাস্ক ছাড়া ওই রেস্তোরাঁ থেকে আটক করে পুলিশ। পরে জরিমানা দিলে তাঁদের ছাড়া হয়। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে ওই রেস্তোরাঁ থেকে মাস্ক না পরায় ১৯ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে তারা। প্রশাসন জানিয়েছে, করোনা সংক্রান্ত সুরক্ষাবিধি অক্ষরে অক্ষরে পালন করার কথা বলেছে মহারাষ্ট্র সরকার। যে হারে মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে এখনও সাবধান না হলে বিপদ।

Advertisement

দেশের দৈনিক সংক্রমণের ৬০ শতাংশই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ হাজার ১৭৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। মৃত্যু হয়েছে ৮৪ জনের। যেখানে গোটা দেশে ১৭২ জনে মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রে এখন সক্রিয় করোনা রোগী ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৩৬ জন। আর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গোটা দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৩৬৪ জন। করোনা নিয়ন্ত্রণে দিন কয়েক আগেই সতর্কতা জারি করেছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। বৃহস্পতিবারও মহারাষ্ট্র প্রশাসন জানিয়েছে, করোনা প্রতিরোধে লকডাউনকেই সমাধান বলে মনে করছেন না তাঁরা। সুরক্ষাবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে তাতে কাজ না হলে আরও কড়া পদক্ষেপ করবে মহারাষ্ট্র সরকার।

বৃহস্পতিবার বলিউড অভিনেতা তথা ফিল্ম পরিচালক সতীশ কৌশিকও আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। টুইটারে সেই খবর জানিয়েছেন অভিনেতা। লিখেছেন, আপাতত তিনি বাড়িতেই নিভৃতবাসে রয়েছেন। তবে গত ক’য়েকদিনে তিনি যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁরা যেন নিজেদের করোনা পরীক্ষা করিয়ে নেন। ৬৪ বছর বয়স হয়েছে অভিনেতার। তাঁর দ্রুত সুস্থতার শুভ কামনা করে টুইট করেছেন অনুপম খের-সহ একাধিক বলিউড ব্যক্তিত্ব।

দৈনিক সংক্রমণের হারে মহারাষ্ট্রের পরেই রয়েছে, পাঞ্জাব, গুজরাত, কর্নাটক। তিন রাজ্যেই সতর্কতা মূলক নানা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। গুজরাতে বৃহস্পতিবার থেকেই বন্ধ করা হচ্ছে লোকাল বাস পরিষেবা, জিম এবং স্পোর্টস ক্লাবগুলিকে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১২২ জন আক্রান্ত হয়েছেন গুজরাতে।

কর্নাটকের উদুপি জেলায় মনিপাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ক্যাম্পাসে ৫৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। ওই ক্যাম্পাসকে কনটেনমেন্ট জোন বলে ঘোষণা করা হয়েছে। নয়ডার গৌতমবুদ্ধ নগরেও জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। উৎসবের কারণে হওয়া জনসমাগম আটকাতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। আগামী ১৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হোলি, সব-এ-বরাত, গুড ফ্রাইডে, নবরাত্রি, রামনবমী-সহ অনেকগুলি উৎসব রয়েছে। সেই উৎসবে জন সমাগমের মধ্যে দিয়ে যাতে করোনা না ছড়ায়, তার জন্যই ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এই নিয়ম অনুযায়ী আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চারজনের বেশি জনসমাগম করা যাবে না, নয়ডার এই এলাকাগুলিতে।

তবে এরমধ্যেও করোনা টিকাকরণ নিয়ম মেনে চলছে। ১৭ মার্চ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে ৩৬ লক্ষ করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় টিকা পেয়েছেন ২০ লক্ষ ৭৮ হাজার ৭১৯ জন। এক দিনে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ লক্ষ ৬৩ হাজার ৩৭৯ জনের। এর মধ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার (পরীক্ষায় যতজন পজিটিভ হয়েছেন, সেই অনুপাতে) অনেকটাই বেড়ে হয়েছে ৩.৩৭ শতাংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement