ঠিক কী কারণে করমণ্ডল এক্সপ্রেস এমন ভয়াল দুর্ঘটনার মুখে পড়ল? —ফাইল চিত্র।
শনিবার সারাদিনের উৎকণ্ঠা রবিবার ভোরেই উচ্ছ্বাসের চেহারা নিল৷ করমণ্ডল দুর্ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে নিখোঁজ অসমের দুই যুবক বাড়ি ফিরে এসেছেন৷
ওড়িশার রেল পুলিশ তাঁদের মোবাইল খুঁজে পেয়ে বাড়িতে দুর্ঘটনার খবর জানিয়েছিল৷ এর পরেই শুরু হয় কান্নাকাটি৷ টিভি খুলে পরিবারের সদস্যরা দেখছিলেন লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা৷ এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত, বুঝে উঠতে পারছিলেন না৷ রবিবার সকালে ওদালগুড়ি জেলার কলাইগাঁওয়ের বাড়িতে হাজির হলেন হাফিজুল রহমান ও শামু আলি৷ মুহূর্তে বাড়ির দৃশ্য বদলে গেল৷
কিন্তু দুশ্চিন্তা কাটেনি রূপক দাসের পরিবারে৷ তিনিও ওই ট্রেনে ফিরছিলেন৷ দুর্ঘটনায় জখম হয়ে এখন ওড়িশার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ রাজ্য সরকার অবশ্য তাঁর চিকিৎসার তদারকি এবং পরে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে দু’জন অফিসারকে বালেশ্বরে পাঠিয়েছে৷ স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত অধিকর্তা বণবীর বরা ও তনভির আলম সরকারি নির্দেশে এ দিনই গুয়াহাটি থেকে বিমানে রওনা হন৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেশব মহন্ত রূপকের সঙ্গে কথা বলেন৷ তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা তাঁরা করবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেন৷
বাড়ি ফিরে হাফিজুল রহমান জানান, ট্রেনের চার্জার পয়েন্টে একটি মোবাইল লাগিয়ে রেখেছিলেন৷ আর একটি ছিল ব্যাগে৷ ব্যাগে ২০ হাজার টাকাও ছিল৷ কিন্তু দুর্ঘটনার পর ব্যাগটি খুঁজে পাননি৷ পকেটে এক হাজার টাকা ছিল বলে দ্রুত বাড়ি ফিরতে পেরেছেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘প্রবল ঝাঁকুনিতে আমাদের কামরাটি ছিটকে পড়ে৷ চার দিকে কান্নাকাটি, চিৎকার-চেঁচামেচি৷ আমি ও শামু জানালা দিয়ে কোনওক্রমে বেরিয়ে যাই৷ কয়েক জনকে উদ্ধারও করি৷’’ হাফিজুল জানান, পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ ছিল যে, তাঁরা অসুস্থ বোধ করতে থাকেন৷ পরে অন্যদের সহায়তায় বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে বাসে চড়ে হাওড়ায় চলে আসেন৷ সেখান থেকে রেলে বাড়ি ফেরেন৷
হাফিজুলের অনুমান, রেল পুলিশ ব্যাগটি খুঁজে পেয়ে মোবাইল বার করে বাড়িতে ফোন করেছে৷ এখন অবশ্য হারানো ব্যাগ বা ২০ হাজার টাকা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই৷ মা-বাবার কথায়, ‘‘ছেলেটাকে ফিরে পেয়েছি, আর কিছু চাই না৷’’