—ফাইল চিত্র।
পৌঁছনোর কথা ছিল বিকেল ৪টে ৫০ মিনিটে। কিন্তু প্রায় আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় পর চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে পৌঁছল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর এই প্রথম বৃহস্পতিবার যখন চেন্নাই পৌঁছল ‘অ্যাম্বুল্যান্স ট্রেন’, তখন ঘড়িতে বাজে সন্ধ্যা ৭টা ৩৬ মিনিট। দুর্ঘটনার পর প্রথম যাত্রায় পা রেখেই ‘লেট লতিফ’ তকমা জুটল করমণ্ডলের।
বুধবার দুপুর ৩টে ২০ মিনিটে হাওড়ার শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ার কথা ছিল করমণ্ডলের। কিন্তু ৬ মিনিট দেরিতে ছাড়ে ট্রেনটি। গত ২ জুন ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে বেলাইন হয়েছিল করমণ্ডল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসও। দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ির কামরার উপর উঠে গিয়েছিল করমণ্ডলের ইঞ্জিন। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৮৮ জনের। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। সেই ভয়াবহতার ৬ দিনের মাথায় আবার রেলপথে ফিরেছে করমণ্ডল। তবে দুর্ঘটনার আতঙ্ক প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেরিয়েছে যাত্রীদের। বুধবার যা স্বচক্ষে দেখেছে আনন্দবাজার অনলাইনও।
দুর্ঘটনার পর করমণ্ডলের প্রথম যাত্রা ঘিরে বাড়তি নজর ছিল সব মহলেই। তাই বুধবার দুপুরে শালিমার স্টেশনে যাত্রীদের পাশাপাশি আরও বহু মানুষেরই ভিড় ছিল। বুধবার বিকেলের পর থেকে সর্বক্ষণ করমণ্ডলের যাত্রাপথের দিকে চোখ রেখেছিলেন সকলে। শুরু থেকেই দেরিতে চলছিল ট্রেনটি। যে স্টেশনে দাঁড়ানোর কথা নয়, সেখানেও দাঁড়িয়েছিল দূরপাল্লার এই ট্রেন। কয়েকটি স্টেশনে আবার নির্দিষ্ট সময়ের পরও থেমেছিল করমণ্ডল। পাশাপাশি গাড়ির গতিও কম রাখা হয়েছিল। তার জেরেই গন্তব্যে পৌঁছতে অনেকটা দেরি করল করমণ্ডল, এমনটাই মনে করছেন যাত্রীদের একাংশ।
বুধবার করমণ্ডল সেই বাহানগা বাজারের উপর দিয়েই পার হয়েছে। রাত ৯টা ২৯ মিনিটে বাহানগা বাজার স্টেশন দিয়ে যায় ট্রেনটি। রেললাইনের পাশে তখন রয়েছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডলের কামরা। রেললাইনের দু’পাশে অস্থায়ী আলো বাঁধা রয়েছে। সেই আলোতেই দুর্ঘটনাস্থলের ছবি তুলতে মুখিয়ে ছিলেন যাত্রীরা। ওই জায়গা দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সময় অনেক যাত্রীরই বুক ঢিপ ঢিপ করে উঠেছিল। বাহানগা বাজার স্টেশন ছুঁয়ে যখন ট্রেনটা পেরিয়ে গেল, তখন রাত ৯টা ৩৩। লেভেল ক্রসিং থেকে এই পর্যন্ত— গোটা পর্বে ট্রেনের গতি ছিল ঘণ্টায় মেরেকেটে ২০ কিমি।
দুর্ঘটনার পর আতঙ্কের আবহে অবশেষে বৃহস্পতিবার গন্তব্যে পৌঁছল করমণ্ডল। এ যেন নতুন করে এক বৃত্ত সম্পূর্ণ করল এই দূরপাল্লার ট্রেন। ভয় দূর করে আবার স্বাভাবিক ছন্দে রেলপথে ছোটাই এখন করমণ্ডলের পরের চ্যালেঞ্জ।