হাসপাতালে ভর্তি রামানন্দ পাসোয়ান। ছবি: পিটিআই।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ওড়িশার এক হাসপাতালে ভর্তি নেপালি কিশোর। এক টিভি সাক্ষাৎকারই তাকে ফিরিয়ে দিল বাবা-মায়ের কাছে।
গত ২ জুন বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছিল চেন্নাইগামী আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনেই আত্মীয়দের সঙ্গে বেড়াতে যাচ্ছিল বছর পনেরোর কিশোর রামানন্দ পাসোয়ান। তার আত্মীয়দের এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলেও বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছে রামানন্দ। তবে গুরুতর জখম হয়েছে সে। তাকে উদ্ধার করে ওড়িশার এসসিবি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানেই আইসিইউতে চিকিৎসা চলছে তার।
করমণ্ডল দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সুদূর নেপাল থেকে বালেশ্বরে ছুটে এসেছিলেন রামানন্দের বাবা-মা। পুত্রের খোঁজ চালানোর সময় এক টেলিভিশন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাঁরা। হাসপাতালের যে ওয়ার্ডে রামানন্দ ভর্তি, সেই ঘরে একটি টিভি রয়েছে। ঘটনাচক্রে, সেই টিভিতে করমণ্ডল দুর্ঘটনার খবর দেখানোর সময় এক সংবাদমাধ্যমের চ্যানেলে বাবা-মাকে দেখতে পায় রামানন্দ। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি সে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এর পরই রামানন্দের বাবা-মায়ের খোঁজ শুরু করেন। ওই সংবাদমাধ্যমের অফিসে যোগাযোগ করেন তাঁরা। তাদের কাছ থেকে ভিডিয়ো সংগ্রহ করে রামানন্দকে আবার দেখানো হয়। রামানন্দ নিশ্চিত করে, ওঁরাই তার বাবা-মা। এর পরই রামানন্দের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খুব বেশি অপেক্ষাও করতে হয়নি তাঁদের। রামানন্দের বাবা-মাকে মেডিক্যাল কলেজে আসার জন্য বলা হয়। এর পরই তাঁরা হাসপাতালে এসে ছেলের সঙ্গে দেখা করেন।
রামানন্দের বাবা হরি পাসোয়ান বলেন, “ছেলেকে খুঁজে পেয়ে আমরা খুব খুশি। যে আত্মীয়দের সঙ্গে ও বেড়াতে যাচ্ছিল, তাঁরা সকলেই এই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। ঈশ্বরের কৃপায় এই দুর্ঘটনায় আমার ছেলে বেঁচে গিয়েছে।” হরি আরও জানান, ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন। নেপাল থেকে সোজা চলে এসেছিলেন ভুবনেশ্বরে। সেখানে একের পর এক হাসপাতাল খুঁজে বেড়িয়েছেন পুত্রকে। কিন্তু কোথাও খোঁজ পাচ্ছিলেন না। তবে এ ভাবে পুত্রকে খুঁজে পাবেন, তা কল্পনা করতে পারেননি, এমনটাই জানিয়েছেন হরি।