নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।
জিএসটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সামনে। তার পরে সেই ব্যবসায়ীকে এক ভিডিয়োয় দেখা গেল সীতারামনের সঙ্গেই (ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)। ভিডিয়ো দেখে মনে হচ্ছে, সীতারামনের কাছে ক্ষমা চাইছেন তিনি। এর পরেই বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী সরকারকে নিশানা করে আসরে নেমেছে কংগ্রেস।
ঘটনার শুরু বুধবার। কোয়ম্বত্তূরে ছোট ও মাঝারি উদ্যোগপতিদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর কথোপকথনের একটি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ‘অন্নপূর্ণা হোটেল’-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রীনিবাসন। বিরোধী রাজনীতিকদের পোস্ট করা ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, শ্রীনিবাসন জিএসটি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তিনি বলেন, ‘‘এক একটি পণ্যে জিএসটি এক এক ভাবে প্রয়োগ করায় সমস্যা হচ্ছে। বানরুটির জন্য এক রকম জিএসটি। আবার তাতে ব্যবহৃত ক্রিমের জন্য আলাদা জিএসটি। টাকা বাঁচাতে ক্রেতারা বান আর ক্রিম আলাদা আলাদা ভাবে নিচ্ছেন। এমনকি কর আধিকারিকদের জিএসটি সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট নয়।’’ কোয়ম্বত্তূরের বিধায়ক বনতী শ্রীনিবাসনকে দেখিয়ে অন্নপূর্ণার ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, ‘‘আপনাদের বিধায়কই জিএসটি নিয়ে তর্ক করতেন।’’ সেখানে শ্রীনিবাসনের কথা শুনে হাসতে দেখা যাচ্ছে সীতারামনকে।
এর পরে বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া সেলের নেতা বালাজি এম এসের পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, শ্রীনিবাসন সীতারামনকে বলছেন, ‘‘আমি কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী নই। আমাকে ক্ষমা করুন।’’
এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার পরেই শুরু হয় বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, জিএসটি নিয়ে প্রশ্ন তোলার ফলেই কি শ্রীনিবাসনকে ক্ষমা চাওয়ানো হচ্ছে?
সমাজমাধ্যমে রাহুল গান্ধী দাবি করেন, ‘‘এক জন ছোট ব্যবসায়ী জিএসটি ব্যবস্থা সহজ করার কথা বলছেন। কিন্তু ক্ষমতার ঔদ্ধত্যে তাঁকে অপমান করলেন অর্থমন্ত্রী। বহুবার এমন কাজ করেছেন তিনি। ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীরা নোটবন্দি ও জিএসটি-র ভুল পদক্ষেপের ফলে ধাক্কা খেয়েছেন। বিজেপির লক্ষ্য কেবল মোদীজির বন্ধু বড় ব্যবসায়ীদের সাহায্য করা।’’ তাঁর দাবি, এই জিএসটি ব্যবস্থা বদলে নয়া জিএসটি আইন তৈরির বিষয়ে কংগ্রেস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিজেপির ‘ছোট ব্যবসায়ীদের লুট করো ও বার্তাবাহককে গুলি করো’ নীতি দেশের অর্থনীতির বিপদ ডেকে আনছে।
প্রায় একই সুরে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার বক্তব্য, ‘‘বৈধ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করার জন্য এক ব্যবসায়ীকে প্রথমে ব্যঙ্গ করা হল। তার পরে তাঁকে জোর করে ক্ষমা চাওয়ানো হল।’’
এক ‘শ্রদ্ধেয়’ ব্যবসায়ী ও অর্থমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কথোপকথন ফাঁস হওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে আন্নামালাই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপির কয়েক জন কর্মী ভুল করে ব্যক্তিপরিসরের অধিকার লঙ্ঘন করেছেন। সে জন্য আমি শ্রীনিবাসনের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। তিনি তামিলনাড়ুর বাণিজ্য জগতের এক জন স্তম্ভ।’’